নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস রবিবার

স্বাস্থ্যকর বিশ্বের জন্য ঐক্য গড়ার আহ্বান 

ছবি : সংগৃহীত

বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস রবিবার ২৫ সেপ্টেম্বর। দেশের স্বাস্থ্য খাতে ফার্মাসিস্টদের অবদান এবং অগ্রগতিকে সমর্থন জানিয়ে ম্যানেজমেন্ট সাইন্সেস ফর হেলথের বেটার হেলথ ইন বাংলাদেশও এই গুরুত্বপূর্ণ দিবসটি পালন করছে। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘Pharmacy united in action for a healthier world’ অর্থাৎ ‘ফার্মেসি স্বাস্থ্যকর বিশ্বের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ’। বিভিন্ন দ্বন্দ্ব, ভিন্ন রাজনীতি ও সংস্কৃতি এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যসহ সব বাধা কাটিয়ে স্বাস্থ্যের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানে এবার পালিত হচ্ছে দিবসটি।

আন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশনের এফআইপি প্রেসিডেন্ট ডমিনিক জর্ডান বলেছেন, অসংক্রামক রোগ যেমন কার্ডিওভাসকুলার, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা, মানসিক স্বাস্থ্য এবং এইচআইভি, যক্ষ্মাসহ বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতিসংঘ। আমরা এই লক্ষ্য অর্জনে এরই মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে উন্নতি দেখেছি এবং আমাদের ফার্মাসিস্ট পেশার জন্য গর্ব করা উচিত। পাশাপাশি এর অবদানগুলো সবার জানা উচিত।

ডমিনিক জর্ডানের মতে, একজন রোগী বা গ্রাহকের বিশ্বস্ত বন্ধু হলেন ফার্মাসিস্ট। যেকোনো সম্পর্কের মূলে আছে বিশ্বাস। বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণাপত্রে বহুবার ওঠে এসেছে যে কার্যকরী স্বাস্থ্যসেবার জন্য একজন রোগী এবং সেবাদানকারীর পারস্পরিক বিশ্বাস এবং ভরসা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

PLOS One জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে, যদি একটি দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর জনগণের বিশ্বাস থাকে তবে তাদের মধ্যে অন্যদের তুলনায় রোগের উপসর্গ কম দেখা যায় এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়ে থাকে। গবেষণায় এও পাওয়া গেছে যে, যদি একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর ওপর রোগীর বিশ্বাস থাকে তবে চিকিৎসার ফলাফল ইতিবাচক হয় এবং এক্ষেত্রে রোগীর সন্তুষ্টিও বেশি থাকে।

ফার্মাসিস্ট এবং বেটার হেলথ ইন বাংলাদেশ প্রকল্প, ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস ফর হেলথের কারিগরি উপদেষ্টা রাইয়ান আমজাদের মতে, একটি ফার্মেসি নিঃসন্দেহে আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য বিশ্বস্ত সঙ্গী। এছাড়াও কোভিড-১৯ অতিমারিতে টিকা আবিষ্কার থেকে শুরু করে সমগ্র দেশ যখন লকডাউনে, ফার্মেসিতে ওষুধ নিশ্চিতকরণে দিনরাত কাজ করে গেছেন ফার্মাসিস্টরা। এই গুরুতর সময়ে ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করেছে।

রাইয়ান আমজাদ বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ ওষুধ বিক্রি হয় ফার্মাসিস্টের পরামর্শে। বর্তমান বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থান থেকে এটাই বাস্তব চিত্র যে, অধিকাংশ রোগীর কাছে ফার্মাসিস্টই তার প্রথম পরামর্শক, চিকিৎসক এবং আরোগ্য সহায়ক। ফার্মেসিতেই অনেক রোগী প্রথম জানতে পারে তাদের উচ্চ রক্তচাপ রোগ বা ডায়াবেটিস এর কথা, জানতে পারে প্রথম গর্ভধারণের সংবাদ। জীবনের এই প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রোগী প্রথম যাকে কাছে পায় তিনি ফার্মাসিস্ট।

এই ফার্মাসিস্ট আরো বলেন, আমরা জানি অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্সের বিষয়ে সারা বিশ্বে চলছে সতর্কতামূলক প্রচারণা। এই জটিল সমস্যার সহজ একটি সমাধান আমাদের এই ফার্মাসিস্ট ভাইবোনেরা। অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স শেষ করার গুরুত্ব একজন ফার্মাসিস্ট যখন রোগীকে বোঝাতে পারবে, যখন ফার্মাসিস্ট বলে দেবে যে অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স শেষ না করলে পরবর্তী সময়ে ওষুধ রোগীর দেহে আর কাজ করবে না অথবা কোর্স সম্পূর্ণ করার জন্য ফুড সাপ্লিমেন্ট না কিনে অ্যান্টিবায়োটিক ফুল কোর্স কেনা বেশি জরুরি, তখন একদম প্রাথমিক পর্যায়েই অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্সের বিরুদ্ধে সবচেয়ে জোরালো হাতিয়ারটি হয়ে দাঁড়ায় একজন ফার্মাসিস্ট।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
স্বাস্থ্যকর বিশ্ব,ঐক্য গড়ার আহ্বান
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close