দাবি না মানলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চা শ্রমিকদের
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে চট্টগ্রাম, সিলেটসহ সারা দেশের ১৬৬ চা-বাগানে ধর্মঘট পালন করছে চা শ্রমিকেরা। কেননা দেশে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি। এই অবস্থায় দৈনিক ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তাই শ্রমিকেরা চান শ্রমের ন্যায্য মূল্য। এ পরিস্থিতিতে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় উন্নীত করার দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছেন শ্রমিকেরা।
দাবির বিষয়ে এখন বৈঠক চলছে রাজধানীর শ্রম অধিদপ্তরে। বৈঠকের বিরতিতে এসে শ্রমিক নেতারা বলেছেন, দাবি না মানলে আন্দোলন চলবে। বুধবার (১৭ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম অধিদপ্তরে চা বাগানের মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়।
বাংলাদেশ শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে চা শ্রমিক-মালিকপক্ষ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চা-শ্রমিকেরা ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে কোনোরকম খেয়ে না খেয়ে সংসার চালাচ্ছেন। এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমিকদের তিন বেলা খাবারও জুটছে না। তাই আমরা ৩০০ টাকার ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছি। এ দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
শ্রমিক নেতারা জানান, চা শ্রমিকদের সঙ্গে সর্বশেষ দ্বি-বার্ষিক চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। পরে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশি চা সংসদের কাছে ২০ দফা দাবি নামায় ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি দাবি করে। এ নিয়ে দফায় দফায় এ পর্যন্ত ১৪টি বৈঠক করেছে শ্রম অধিদপ্তর। কিন্তু কোনো সমাধান দিতে পারেনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে চা শ্রমিকেরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি ন্যায্য মজুরি নির্ধারণ করে দেবেন। আপনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমরা তা মেনে নেব।’
জানা গেছে, গত ৯ অগাস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতির পর শনিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি বা ধর্মঘট পালন করেছেন মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটসহ দেশের ২৪১টি চা বাগানের শ্রমিক। রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি ও সোমবার জাতীয় শোক দিবসের জন্য দুই দিন কর্মসূচি শিথিল করে চা শ্রমিক ইউনিয়ন। মঙ্গলবার থেকে ফের ধর্মঘটে যায় শ্রমিকেরা।
নিজেদের দাবি আদায়ে শ্রমিকরা শক্ত অবস্থানে থাকায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চা বাগানগুলোতে। বন্ধ হয়ে গেছে দেশের সব চা বাগান ও কারখানার কার্যক্রম। এ সংকট কাটাতে উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম অধিদপ্তর।