reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ জুন, ২০২২

বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে : কৃষিমন্ত্রী

ছবি : সংগৃহীত।

এবারের বন্যায় ফসলের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতি যেটুকু হয়েছে, সেটুকু পুষিয়ে নিতে সরকারের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে।

বুধবার (২২ জুন) রাজধানীতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমাদের ১১ লাখ হেক্টর (জমিতে) আউশ আবাদ হয়েছে। সেখানে ৫০ হাজার হেক্টরের মতো আক্রান্ত হয়েছে। কাজেই এখনও ওইরকম কোনো ক্ষতি হয়নি।

সরকারের প্রস্তুতি তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত যতটুকু ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য সরকার খুবই তৎপর এবং এ ব্যাপারে তাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। আমাদের পর্যাপ্ত বীজ আছে, যদি বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়, নতুন করে আবার বীজতলা আমরা করব।

টানা ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে গত সপ্তাহে বর্ষার শুরুতেই ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ। সিলেট অঞ্চলে পানি এখন কমতে শুরু করলেও বাড়ছে দেশের মধ্যাঞ্চলে।

ক্ষতিগ্রস্ত সবজি চাষিদের প্রণোদনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, পরবর্তীতে রবিশষ্য আবাদে সরকার চাষিদের বিনামূলে বীজ ও সার দেবে।

আঞ্চলিক আন্তঃসরকার সংস্থা সাউথ এশিয়া কো অপারেটিভ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নাইট্রোজেন দূষণ নীতি ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় বন্যা নিয়ে কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।

দুর্যোগে করণীয় হিসেবে তিনি পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। রাজ্জাক বলেন, পরিবেশের সাথে অ্যাডাপ্ট করতে হবে। সেটি আমাদের জন্য খুবই ইম্পর্ট্যান্ট।

জমিতে নাইট্রোজেনের ঘাটতির বিপদ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, নাইট্রোজেন ৬০-৭০% লস হয়ে যাচ্ছে। এটা কিন্তু তাড়াতাড়ি উড়ে যায় বাতাসে। এটাকে কমিয়ে আনতে হবে। এফিসিয়েন্সি লেভেল বাংলাদেশে খুব-ই কম। মাত্র ৩০-৩৫%। আমরা চাচ্ছি যে এটাকে কীভাবে বাড়ানো যায় এবং এর জন্য রিজিওনাল কোঅপারেশন খুবই ইম্পর্ট্যান্ট এবং আমি মনে করি সাসেপের সদস্য মেম্বার কান্ট্রিরা সবাই মিলে একটা ভালো পলিসি নেবে। যাতে করে নাইট্রোজেন ইফিশিয়েন্সি আমরা বাড়াতে পারি।

বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভারত এবং অন্যান্য দেশ পরিবেশের প্রতি ‘কমিটেড’ মন্তব্য করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশ তো এক্সট্রিমলি ভালনারেবল টু ক্লাইমেট চেইঞ্জ। কাজেই আমাদেরকে সঠিক পথ গ্রহণ করতে হবে।

কৃষি যে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের প্রধান জীবিকা, সে কথা তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফসল উৎপাদন এবং পরিবেশ দূষণ রোধে নাইট্রোজেন ব্যবস্থাপনা খুবই ‘চ্যালেঞ্জিং।

এ অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা এবং পরিবেশগত স্থায়িত্ব নিশ্চিতে টেকসই নাইট্রোজেন ব্যবস্থাপনার বিকাশে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সুসংহতভাবে কাজ করার ‘এখনই সময়’ বলে তিনি মন্তব্য করেন।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বিজ্ঞানীরা এ অঞ্চলে নাইট্রোজেন দূষণের উপর বিদ্যমান নীতির ওপর একটি আঞ্চলিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ এবং নেপালও তাদের জাতীয় প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অনুষ্ঠানে।

বাংলাদেশের প্রতিবেদন তুলে ধরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার পরিবেশ দূষণ, খাদ্য নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নাইট্রোজ দূষণের বাস্তবসম্মত সমাধান খুঁজে পেতে বিজ্ঞানী এবং নীতি নির্ধারকদের সম্মিলিত কাজে ওপর গুরুত্ব দেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং সাউথ এশিয়া কো অপারেটিভ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের মহাপরিচালক ড. মাসুমুর রহমান বলেন, নাট্রোজেন দূষণ মোকাবেলায় প্রমাণ-ভিত্তিক নীতিমালা তৈরির জন্য দক্ষিণ এশীয় সহযোগিতার একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত এটি।

অন্যদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রজার জেফারি হানান, ইউকে সেন্টার ফর ইকোলজি অ্যান্ড হাইড্রোলজির অধ্যাপক মার্ক সুটন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বন্যার ক্ষতি,সরকার,প্রস্ততি,কৃষিমন্ত্রী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close