reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৩ মে, ২০২২

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কারাগার থেকে হাসপাতালে হাজী সেলিম

ফাইল ছবি।

আত্মসমর্পণের পর রবিবার (২২ মে) আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। কারাগারে এক রাত কাটিয়ে সোমবার (২৩ মে) সকালে তাকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার সকাল ৯টায় অ্যাম্বুলেন্সে করে হাজী সেলিমকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে আনা হয়।

গণমাধ্যমকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, কারাগারে থাকা হাজী সেলিমকে আজ সকালে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত। হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় দণ্ডিত হাজী সেলিম গতকাল রবিবার বেলা তিনটার দিকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এ আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক শহীদুল ইসলাম জামিন আবেদন নাকচ করে হাজী সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালতের এই আদেশের পর গতকালই হাজী সেলিমকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে এক রাত থেকে তিনি পরদিন সকালে হাসপাতালে ভর্তি হলেন।

হাজী সেলিমকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যাপারে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. মাহাবুবুল ইসলাম জানান, হাজী সেলিম হৃদরোগসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। আদালত হাজী সেলিমকে সুচিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, হাজী সেলিমকে আজ সকাল ৯টায় অ্যাম্বুলেন্সে করে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

গতকাল হাজী সেলিমের আইনজীবীরা মৌখিক ও লিখিতভাবে আদালতকে জানান, ছয় বছর আগে হাজী সেলিমের হৃদ্‌যন্ত্রে অস্ত্রোপচারের সময় তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। তারপর থেকে তিনি বাক্‌প্রতিবন্ধী। তার কথা পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় না।

হাজী সেলিমের আইনজীবী প্রাণ নাথ বলেন, হাজী সেলিম গতকাল আত্মসমর্পণের পর থেকে অসুস্থবোধ করছিলেন। গতকাল বিকেলে কারাগারে তাকে নিয়ে যাওয়ার পরও তিনি অসুস্থবোধ করছিলেন। তাকে সুচিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে আদালতের নির্দেশনা কারা কর্তৃপক্ষকে দেখানো হয়। তাই আজ সকালে তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

কারাগারের জেলার মাহাবুবুল ইসলাম জানান, সংসদ সদস্য হাজী সেলিম কারাগারের প্রথম শ্রেণির একজন বন্দি (ডিভিশনপ্রাপ্ত আসামি)। গতকাল রাতে তিনি কারাগারের খাবার খেয়েছেন। খাবারের তালিকায় ছিল ভাত, মাছ ও মাংস।

বিচারিক আদালতের দেওয়া হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে গত ১০ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। নির্ধারিত সময় শেষের দুই দিন আগে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান।

আপিলের শর্তে হাজী সেলিমের জামিন চান তার আইনজীবীরা। অন্যদিকে, জামিনের বিরোধিতা করে দুদকের পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, এমন দণ্ডিত আসামির আপিলের শর্তে জামিনের বিধান নেই।

শুনানি নিয়ে বিচারক জামিন আবেদন নাকচ করেন হাজী সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের আদেশের পর হাজী সেলিমকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।

সম্প্রতি কঠোর গোপনীয়তায় দেশ ছেড়েছিলেন হাজী সেলিম। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি দেশে ফেরেন।

সম্প্রতি দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল থাকায় হাজী সেলিম সংসদ সদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।

তবে হাজী সেলিমের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ মনে করেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত চূড়ান্ত বিচারে হাজী সেলিমকে দণ্ডিত বলা যাবে না। তিনি সংসদ সদস্য পদে থাকতে পারবেন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
হৃদ্‌রোগ,হাজী সেলিম,হাসপাতাল,কারাগার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close