সোনাসহ বিমানের কেবিন ক্রু আটক, বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য!
সৌদিতে ৩ কোটি টাকার সোনা ও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাসহ জেদ্দা বিমানবন্দরে আটক হয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কেবিন ক্রু রুহুল আমিন শুভ।
সৌদি আরবের জেদ্দা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বুধবার (২৬ জুলাই) সকালে ফ্লাইটে উঠার আগ মুহুর্তে তিনি আটক হন। এরপরই বিমানের ফ্লাইট ঘিরে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে।
সৌদি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিমানের ঢাকাগামী ফ্লাইট বিজি ৪০৩৬ এর ফ্লাইট স্টুয়ার্ড হিসেবে তার ডিউটি ছিল। বিমানে উঠার আগ মুহুর্তে তারা জানতে পারেন- তার লাগেজে বিপুল পরিমাণ সোনা ও বৈদেশিক মুদ্রা আছে।
পুলিশের তল্লাশিতে তার ব্যাগ থেকে বেরিয়ে আসে প্রায় ৩ কোটি টাকা মূল্যের সোনা। পুলিশ এসব সোনার বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা তা দেখতে চাইলে শুভ তা দেখাতে পারেননি। এরপর শুভকে ছাড়াই বিমানের ওই ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশ্যে জেদ্দা বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
এ ব্যাপারে জানতে বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ১০টার দিকে যোগাযোগ করা হলে বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার বলেন, খোঁজ নিচ্ছি, আমি এ বিষয়টি জানি না।
সিভিল এভিয়েশন আইন অনুযায়ী, বিমানের এ ধরনের ফ্লাইটে বাধ্যতামূলকভাবে ১০ জন কেবিন ক্রু থাকতে হবে। কিন্তু শুভ আটক হওয়ায় পাইলট আইন লঙ্ঘন করে ৯ জন ক্রু নিয়ে ঢাকায় আসেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এই ফ্লাইটটি।
এদিকে বিমান কর্তৃপক্ষ শুভকে চাকরিচ্যুত করেছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানা গেছে।
অভিযোগ আছে, দীর্ঘদিন ধরে শুভর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ দেশ থেকে শত শত কোটি টাকা পাচার করে নিয়ে বিদেশ থেকে অবৈধভাবে সোনা আনতেন। এ অবৈধ কাজের মাধ্যমে শুভ কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান।
আরও অভিযোগ আছে, বিমানের শিডিউলিং শাখার শাকিল নামের এক কর্মকর্তার হাত ধরে শুভ বিমানে একটি বাহিনী গড়ে তোলেন। এই বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে বিমানের ফ্লাইট ব্যবহার করে সৌদি আরব, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে সোনা আনতেন।
শাকিল শিডিউলিং শাখায় যোগদানের পর তিনি মোটা অংকের টাকা নিয়ে এই গ্রুপের সদস্যদের এসব ফ্লাইট ব্যবস্থা করে দিতেন।
জানা গেছে, শাকিল ক্রুদের কাছ থেকে প্রতি ফ্লাইটে ১০ হাজার করে টাকা নিতেন। তিনি নিজেকে বিমানের সাবেক একজন প্রভাবশালী পরিচালকের ভাই পরিচয় দিতেন।
তার বিরুদ্ধে এর আগেও সোনা আমদানি ও টাকা পাচারসহ অসংখ্য অভিযোগ থাকলেও ওই পরিচালকের কারণে কোনো অভিযোগই কর্তৃপক্ষ আমলে নেয়নি।
শুভ ছাড়াও তার বাহিনীর অপর এক সদস্যের বিরুদ্ধেও বিমান চাকরিচ্যুতিসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে জানা গেছে। তার নাম শেহজাদ। তিনিও সম্প্রতি সোনাসহ হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন।
তবে এসব কাজে মদদদাতা শাকিলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা- তা জানা যায়নি।
জেদ্দায় সংঘঠিত এ কান্ডের পর শুভর গডফাদার শাকিলকে খুঁজছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, যে ফ্লাইটে রুহুল আমিন শুভ সোনা নিয়ে আটক হয়েছেন ওই ফ্লাইটটির শিডিউলও মোটা অংকের টাকা নিয়ে শাকিল দিয়েছিলেন।