reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১০ জানুয়ারি, ২০২২

আজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

ফাইল ছবি

১০ জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের এদিন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে তিনি ফিরে আসেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের লাহোর থেকে প্রায় ৮০ মাইল দূরে লায়ালপুর শহরের মিয়ানওয়ালি কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগের পর ৮ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে তিনি মুক্তি লাভ করেন। পরে পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান বঙ্গবন্ধু। সেখান থেকে দিল্লি হয়ে ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে ঢাকায় ফেরেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি “মুক্ত স্বদেশে জাতির পিতা” প্রতিপাদ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সোমবার (১০ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনের শহিদ মনিরুল আলম মিলনায়তন থেকে সম্প্রচারিত হবে। দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে বাবা-মাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার লেখা কবিতা আবৃত্তি হবে। আলোচনা পর্বে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ওপর বিশিষ্ট আলোচকেরা আলোচনা করবেন।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন।

সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন। বেলা ১১টায় শেখ মুজিবের স্মৃতি বিজড়িত টুঙ্গিপাড়ায় তার সমাধিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের শ্রদ্ধা নিবেদন।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বিকেল সাড়ে ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সীমিত পরিসরে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ফিরে দেখা

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। সে ঘোষণায় বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে তদানিন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে তথা ৮ জানুয়ারি মুক্ত হন। এদিন তাকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬ টায় তাকে বহনকারী বিমানটি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

বেলা ১০টার পর বঙ্গবন্ধু কথা বলেন ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে পরের দিন ৯ জানুয়ারি জন্মভূমি বাংলার পথে যাত্রা করেন বঙ্গবন্ধু।

১০ জানুয়ারি সকালে তিনি দিল্লিতে নামেন। সেখানে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, প্রধান নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সেদেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা পান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এসময় তিনি ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে তিনি আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে’।

১৯৭২ সালের ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারি। দিল্লি থেকে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মাটিতে পা রাখেন বঙ্গবন্ধু। সেদিন লাখ লাখ বাঙালি ঢাকা বিমান বন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পর্যন্ত তাকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকেল পাঁচটায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন। তার ভাষণে ও আগমনের আনন্দে আত্মহারা হন স্বাধীন বাংলার মুক্ত জনতা। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে জাতি গ্রহণ করে স্বাধীনতা ও বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বঙ্গবন্ধু,মুক্তিযুদ্ধ,বাংলাদেশ,স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close