reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ অক্টোবর, ২০২১

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন

খুলে গেল বহু আকাঙ্ক্ষার সেই পায়রা সেতু

ছবি : সংগৃহীত

উদ্বোধন হলো দক্ষিণাঞ্চলবাসীর বহুল আকাঙ্ক্ষিত দুমকি উপজেলার লেবুখালীর পায়রা সেতু। রবিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই সেতু উদ্বোধন করেন। এর ফলে এই সেতু দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচলের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্বার উন্মোচিত হলো। এখন থেকে সাগরকন্যা কুয়াকাটা যেতে আর কোনো ফেরি পারাপারের প্রয়োজন হবে না।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতুর দুমকী প্রান্তে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক এমপি, বরিশাল সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার সংসদ সদস্যরা, সড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী ও প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর, শেখ হাসিনা সেনা নিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল আবুল কালাম মো. জিয়াউর রহমান, বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল, ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান, পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান, সড়ক বিভাগ বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মো. তারেক ইকবালসহ সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী এলাকার পায়রা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এই পায়রা সেতু। রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে সেতুটির দূরত্ব ১৯২ কিলোমিটার এবং বরিশাল নগরী থেকে ২৭ কিলোমিটার।

এর আগে, ২০১২ সালের মে মাসে সেতু নির্মাণের প্রকল্পে অনুমোদন দেয়। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের যৌথ অর্থায়নে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন সেতুটির নির্মাণকাজ করছে। ২০১৩ সালে ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুটি নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ছিল এবং ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪১৩ দশমিক ২৮ কোটি টাকা। কিন্তু নানান জটিলতায় সর্বশেষ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ১১৮ কোটি।

জানা গেছে, এ সেতুর কিছু বিশেষত্ব আছে। এটি দেশের সব থেকে বড় স্প্যান বিশিষ্ট সেতু, যার দৈরঘ্য ২০০ মিটার করে। এতে পদ্মা সেতুর থেকেও বেশি বড় স্প্যান সংযুক্ত করা হয়েছে। দেশে এই প্রথম কোন সেতুতে হেলথ মনিটরিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে বজ্রপাত ও ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা ওভার লোডেড যানবাহন চলাচলে সেতুর ভাইব্রেশন সিস্টেমে কোন ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে এই সিস্টেম ওয়ার্নিং দেবে।

এটি দেশের দ্বিতীয় সেতু যা এক্সট্রা ডোজ ক্যাবল সিস্টেমে তৈরি করা হয়েছে। ফলে নদীর মাঝে একটি এবং দুপাড়ে দুটি পিলারের ওপর মূল সেতুটি দাঁড়িয়ে আছে। এছাড়াও পায়রা সেতুর জন্য আলাদা সাব স্টেশনের মাধ্যমে সেতুতে বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে বাতি জ্বলবে। থাকছে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থাও।

সাগরকন্যা কুয়াকাটার পর্যটন সম্ভাবনা মাথায় রেখে সেতুটি নান্দনিক রূপে গড়ে তোলা হয়েছে। বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে নির্মিত সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার খবরে খুশি স্থানীয়রা। কারণ পায়রা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে ঢাকার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের পথ সুগম হবে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা, পায়রা সমুদ্রবন্দর, পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, কোস্টগার্ডের সিজি-বেইজ অগ্রযাত্রা, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পায়রা সেতু,উদ্বোধন,প্রধানমন্ত্রী,দুমকি,কুয়াকাটা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close