শাহবাগে গণ–অবস্থান ও অনশন
‘প্রশাসনের গাফিলতিতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা’
সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে গণ–অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন।
শনিবার (২৩ অক্টোবর)সকাল ৬টা থেকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বানে এ গণ অনশন চলছে।
একই সঙ্গে সংগঠনটির আয়োজনে সারা দেশে এই গণ–অনশন ও গণ–অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা।
পূজামণ্ডপ, মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে কর্মসূচি থেকে সারা দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা জোরদার, দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচারের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, এই হামলা শুধু হিন্দুদের ওপর হামলা নয়, গোটা বাঙালির ওপর হামলা।
প্রশাসনের গাফিলতির কারণে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, তাদের একটা অংশ এর জন্য দায়ী। প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক কর্মচারীদের নিষ্ক্রিয়তা চিহ্নিত করে, তদন্ত করে বিচার করার দাবি জানান মহাজোট সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী।
শাহবাগের কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক।
গণ–অনশন, গণ–অবস্থানে কর্মসূচিতে গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী বলেন, এ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে ব্যবসা করে। সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখা হয়েছে, আবার রাষ্ট্রকে বলা হয় ধর্মনিরপেক্ষ, এটি চরম ভাঁওতাবাজি।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব পলাশ কান্তি দে বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করতে হবে। এসব ঘটনা সবার আগে বিচার করতে হবে। কারণ, এটা অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এটা আমাদের বাঁচা-মরার লড়াই। এই লড়াইয়ে জিততে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কর্মকার বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি বারবার দেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করছে। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার সমস্যাটি একটি রাজনৈতিক সমস্যা, এই সমস্যা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা মানা যায় না। এসব ঘটনার দ্রুত বিচার করতে হবে।
গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, মহিলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য, শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক অরুণ কুমার।
এছাড়া কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), বাংলাদেশ মতুয়া মহাসংঘ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতি, জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদ, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি, বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু লীগ, মাইনরিটি রাইটস ফোরামের নেতা–কর্মীরা।
উপস্থিত আছেন বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, বাংলাদেশ রবি দাস উন্নয়ন পরিষদের নেতা–কর্মীরা।