কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য, সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক আলী আশরাফের প্রথম নামাজে জানাজা শুক্রবার বাদএশা গুলশান আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়।

তার নামাজের জানাজায় অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকসহ আরও অনেকে।

জানাজা শেষে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’ তিনি আরো বলেন, অধ্যাপক আলী আশরাফ ছিলেন একজন সৎ, দক্ষ, অভিজ্ঞ ও আদর্শবান প্রবীণ রাজনীতিবিদ। দেশ ও মানুষের সেবায় তার অবদান জাতি চিরকাল কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টায় নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ এমপি স্ত্রী, এক ছেলে, তিন মেয়েসহ আত্মীয়-পরিজন, রাজনৈতিক সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

এর আগে গত ২ জুলাই পিত্ত থলির পাথর অপসারণের জন্য রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। তার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ফুসফুসে ক্ষতসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা ছিল। এরপর ৯ জুলাই নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় তাকে দ্রুত আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় গত ২৩ জুলাই থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

তিনি ১৯৭৩ সালে অত্যন্ত তরুণ বয়সে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১১ থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। অধ্যাপক আলী আশরাফ ছিলেন সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। পরে, কুমিল্লা-৭ আসন চান্দিনা থেকে ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তিনি সপ্তম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন।

অধ্যাপক আলী আশরাফ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক এবং কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি ১৯৪৭ সালের ১৭ নভেম্বর চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন। চান্দিনার গল্লাই মুন্সি বাড়ির মরহুম মো. ইসমাইল হোসেন মুন্সির ছেলে অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ এমপি ১৯৬২ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান করে রাজনীতি অঙ্গনে পা রাখেন।

শনিবার চান্দিনায় নামাজে জানাজা শেষে সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।