reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৪ মে, ২০২১

এএমআর মহামারি বিশ্বস্বাস্থ্যের আরও বেশি ক্ষতি সাধন করবে : প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারির চেয়ে আসন্ন অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বেশি ধ্বংসাত্মক হবে এমন আশঙ্কা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা মহামারি ইতোমধ্যে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষের জীবন নিয়েছে। আর আসন্ন এএমআর মহামারি বিশ্বস্বাস্থ্যের আরও বেশি ক্ষতি সাধন করবে। এটি সঠিকভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব না হলে খাদ্য সুরক্ষা এবং উন্নতির পাশাপাশি ভৌগোলিক অবস্থানসহ প্রতিটি জীবকে বিপন্ন করতে পারে।

মঙ্গলবার ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স অন ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপ’ এর দ্বিতীয় সভার উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর পূর্বে ধারণকৃত ভাষণটি অনুষ্ঠানে সম্প্রচারিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনেতাদের সতর্ক করেন বলেন, এএমআর কেবল মানুষ, প্রাণী ও উদ্ভিদের স্বাস্থ্যকেই বিপন্ন করবে না, পাশাপাশি তা খাদ্য সুরক্ষা এবং এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য) অর্জনের অগ্রগতির জন্যও হুমকি স্বরূপ। এন্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স ভৌগলিক অবস্থান এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে যে কোনও ব্যক্তিকে প্রভাবিত করতে পারে।

এএমআর নিয়ন্ত্রণ এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ (আইপিসি) ব্যবস্থা কঠোরভাবে মেনে চলা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান-২০১৫ এবং এএমআর-এ জাতিসংঘের রাজনৈতিক ঘোষণা-২০১৬ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এটি সম্ভব।’

এএমআর গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপের সহ-সভাপতি শেখ হাসিনা বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোটোলি এবং অন্যান্য বৈশ্বিক নেতাদের সঙ্গে এএমআর এর হুমকির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একত্রে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী এএমআরের আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বিশ্বব্যাপী কৌশলগুলো কার্যকর ও সহযোগিতামূলক পদ্ধতির মাধ্যমে কার্যকর করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও), এফএও (খাদ্য ও কৃষি সংস্থা) এবং ওআইই (পশুর স্বাস্থ্যের জন্য বিশ্ব সংস্থা) এর চলমান প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

আসন্ন এএমআর মহামারি প্রতিরোধে তিনি বিশ্বের সামনে সাতটি পরামর্শ রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম প্রস্তাবে, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স কন্টেইনমেন্ট-এআরসি-র লক্ষ্য অর্জনের জন্য বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং সমীক্ষা তদারকির পাশাপাশি প্রতিবেদনের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রস্তাবে কার্যকর এবং অন্তর্ভুক্ত এএমআর নজরদারি এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য অ্যান্টিমাইক্রোবায়ালগুলোর যথাযথ ব্যবহার এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা ভাগ করে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন স্তরে নীতি ও নীতি বিকাশের পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী তার চতুর্থ প্রস্তাবনায় প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং মালিকানা ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যের এবং কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক এবং অন্যান্য চিকিৎসা সুবিধায় ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।

তিনি তার পঞ্চম প্রস্তাবনায় স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে এএমআর-নির্দিষ্ট এবং এএমআর-সংবেদনশীল কর্মের জন্য পর্যাপ্ত এবং টেকসই অর্থায়ন নিশ্চিত করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।

ষষ্ঠ ও সপ্তম প্রস্তাবনায় এএমআর প্রতিরোধে বিনিয়োগের জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক, সাশ্রয়ী এবং টেকসই সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা কভারেজের ওপর জোর দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশীয় স্তরে কার্যকর এন্টিমাইক্রোবায়াল ব্যবহার নিশ্চিত করতে ছয় বছরের জাতীয় কৌশলগত পরিকল্পনা এবং এআরসি-তে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার আওতায় অসংখ্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মানব স্বাস্থ্য, গবাদি পশু, মৎস্য ও কৃষি খাতে অ্যান্টিমাইক্রোবায়ালের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই পরিকল্পনাটি তৈরি করা হয়েছে। সরকার ২০১৪ সাল থেকে ডাব্লিউএইচও গ্লাস প্ল্যাটফর্মে এএমআর ডেটা সরবরাহ করে আসছে এবং অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল প্রতিরোধের বিষয়ে গণমানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে মিডিয়াকে জড়িত করার জন্য কাজ করছে।

সূত্র: বাসস।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এএমআর মহামারি,প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close