দ্বিতীয় ঢেউয়ে শিশুদের করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়েছে
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়েছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালে গত একমাসে ৩৭৬টি বিভিন্ন বয়সী শিশুকে পরীক্ষা করে ৬০ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এসব রোগীর বয়স ২১ দিন থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।
গত ১৩ এপ্রিল ঢাকা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসারত এক শিশু মারা যায়। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর এ পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ২৫টি করোনা আক্রান্ত শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ হাসপাতালের কোভিড-১৯ আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসায় নির্ধারিত ২০টি শয্যার মধ্যে ১৬টিতে রোগী ভর্তি রয়েছে। জরুরি (ইমার্জেন্সি) অবস্থায় ব্যবহারের জন্য খালি রাখা হয়েছে চারটি শয্যা।
হাসপাতালে চলতি মাসের শুরুর সপ্তাহের নমুনা পরীক্ষার তথ্য বলছে, গত ১ এপ্রিল ২৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪ জন, ৩ এপ্রিল ৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জন, ৪ এপ্রিল ৩১ জনের মধ্যে ৮ জন, ৫ এপ্রিল ২৮ জনের মধ্যে ৭জন, ৬ এপ্রিল ৩১ জনের মধ্যে ৮ জন এবং ৭ এপ্রিল ৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৭০ শতাংশই শিশু। বাকিরা হাসপাতালে কর্মরত ব্যক্তি।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের করোনা নমুনা সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত টেকনোলজিস্ট মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘এখানে ১৫ দিন থেকে ১৮ বছরের শিশুদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়। আগে এ হাসপাতালে মোট পরীক্ষার ১ শতাংশ সংক্রমণ শনাক্ত হতো। সম্প্রতি তা ১০ শতাংশে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন মাত্র ২৫টি নমুনা পরীক্ষার কিট বরাদ্দ থাকার জটিল রোগে আক্রান্ত শিশুদের করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। করোনা রিপোর্ট ছাড়া চিকিৎসকরা রোগী দেখতে চান না বলে অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।’
হাসপাতালের জন্য কিটের বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালের উপ-পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার সরকার বৃহস্পতিবার বলেন, ‘বর্তমানে শিশুদের করোনা নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্তের পরিমাণ বেড়েছে। গত ১৩ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তিরত এক শিশু মারা গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এ হাসপাতালে ২০টি শিশু কোভিড বেডের মধ্যে ১৬টিতে রোগী ভর্তি করা হয়েছে। তবে হাসপাতালে পরিবহনের চরম সঙ্কট থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য স্টাফদের যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। লকডাউনে পরিবহন বন্ধ থাকায় তারা নির্ধারিত সময়ে আসতে পারছেন না।’
চলমান লকডাউনে চিকিৎসা ব্যবস্থা সচল রাখতে সরকারি সহযোগিতার দাবি জানান ডা. প্রবীর কুমার।
পিডিএসও/ জিজাক