হাসান ইমন

  ২৩ জানুয়ারি, ২০২১

খাল দখলমুক্ত করে হাতিরঝিলের মতো করা হবে : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

ছবি : মুঈদ খন্দকার

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকা শহরে ঐতিহাসিক ৫৩টি খালের প্রমাণ পাওয়া যায়। বর্তমানে রয়েছে ৩৯ টি খাল। এই সব খালগুলোর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে হাতিরঝিলের মতো রুপান্তর করে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চালু করা হবে।

শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে মেঘনা নদীকে কেন্দ্র করে নেয়া মহাপরিকল্পনার চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন খালে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছে। একইসঙ্গে খালে থাকা বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। খাল দখলমুক্ত হয়ে গেলে, নাব্যতা ফিরে এনে ট্রান্সপোর্টের ব্যবস্থা করা হবে।

আরও পড়ুন : আজ আমার সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকার চারপাশের নদীগুলোকে দখলমুক্ত, দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজ চলছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, পদ্মা, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, বালু ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী নিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। এছাড়াও সরকার তুরাগসহ ঢাকার অদূরে বেশ কিছু নতুন শহর গড়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, মানুষের আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোগ বেড়েছে আর এ কারণেই ময়লা আবর্জনার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নদ-নদী, খালসমূহে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য নিষ্কাশন হওয়ার ফলে পানি দূষিত হয়ে যাচ্ছে যা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের বিষয়।

তিনি আরও বলেন, মেঘনা নদীর পানি দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের জন্য আজকের এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান।

মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নে উন্নয়ন সহযোগীদের আর্থিক সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, সকলের সমন্বিত উদ্যোগে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করার পর নদীরক্ষাসহ অনেক জাতীয় কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। নদীপথ ব্যবহার করেই বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের চলাচলের পাশাপাশি পণ্য আনা নেয়া করা হতো।

সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কোনো ভুল বোঝাবুঝি নেই উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঢাকা শহরকে সুন্দর একটি শহরে রুপান্তরিত করতে চাই। আমরা সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করছি। আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাবো ইনশাআল্লাহ।‘

প্রসঙ্গত, মেঘনা নদীকে দখল, দূষণ এবং নাব্যতা সংকট থেকে রক্ষা করতে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ১১ কোটি চার লাখ এক হাজার ৩১৬ টাকা। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্থানীয় সরকারের বিভাগ এবং আইডব্লিউএম এর সহকারী পরিচালক সালেহ খান এ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। প্রকল্পটির মেয়াদ ১৮ মাস। ২০২২ সালের আগস্টে মাস্টার প্লানটির কাজ শেষ হবে।

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, বুড়িগঙ্গা নদী থেকে ঢাকা ওয়াসা ট্রিটমেন্ট প্লান্ট করতে পারে না। কারণ ওই পানিটা অত্যান্ত দূষিত। সে কারণে আমাদেরকে পানি আনার জন্য যেতে হচ্ছে পদ্মা নদীতে, মেঘনা নদীতে। সরকার ইতিমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে এবং বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ রোধ কল্পে মাস্টার প্লান তৈরি হয়েছে। এখন অ্যাকশন প্লান চলছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মন্ত্রীর নেতৃতে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে নদী উদ্ধারের কাজ চলছে। ঠিক সে রকমই মেঘনা নদী যা অত্যন্ত ভাল আছে। কিন্তু মেঘনা নদী যেন কোনো দিনও ওই অবস্থায় চলে না যায়, সে জন্য মেঘনা নদীর একটা মহাপরিকল্পনা তৈরি করা জরুরি বলে সরকার মনে করে। সে কারণে এ মাস্টার প্লানটা তৈরি করার জন্য আইডব্লিউএম এবং সিডিআইএস আমাদের বাংলাদেশের দুইটি অত্যন্ত দাবি, অত্যন্ত নামি এবং অত্যন্ত প্রফেশনাল কনসালটিং ফার্মকে আমরা নিয়োগ করেছি।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, ইন্সটিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) এবং ওয়াসার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পিডিএসও/ জিজাক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী,হাতিরঝিল,খাল দখলমুক্ত,মো.তাজুল ইসলাম
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close