আল-আমিন শাওন
বিশ্ব হাসি দিবস
হাসি ফুটুক সবার মুখে
‘বিশ্ব হাসি দিবস’ ‘ওয়ার্ল্ড স্মাইল ডে’ ‘হাসির দিন’ ‘হাসি ফুটুক সবার মুখে, বিশ্ববাসী থাকবে সুখে’ ভালোবাসার-হাসির বন্যায় প্লাবিত হোক মন-প্রাণ; দৃঢ়তায় অটুট থাকুক সুপ্রিয় বন্ধু-বন্ধন।
‘হাসবো নাকো, সহজ সরল মানুষ আমি, জীবন সাদাসিধে, যতই হাসাও হাসব নাতো, হাসলে লাগে খিদে! কার্টুন দেখি টম অ্যান্ড জেরি, কিংবা গোপাল ভাঁড়, কার্টুন আঁকি তবুও আমার, মুখটা থাকে ভার। রম্য লেখা ছড়া পড়েও, হাসি না তো আমি, আমার কাছে হাসির চেয়ে, কান্না বেশি দামি। পণ করেছি হাসব নাকো, দিলেও মোরে ফাঁসি, বউ যদি কয় হাসতে হবে, তবেই শুধু হাসি।’ হা-হা-হা।
বছরের ৩৬৫ দিনে প্রায় সাড়ে চারশ দিবস পালিত হয়। এমন অনেক দিবস রয়েছে যার কথা সাধারণ মানুষ জানে না। হাসি দিবসও তেমন। ১৯৯৯ সাল থেকে অক্টোবর মাসের প্রথম শুক্রবার পালিত হয় হাসি দিবস। ১৯৬৩ সালে শিল্পী হারভে রোজ বল হলুদ রঙের বৃত্তের মধ্যে দুটো চোখ আর/হ একটা অর্ধচন্দ্রাকৃতির মুখের ছবি আঁকেন। যা স্মাইলি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। স্মাইলির বাণিজ্যিক ব্যবহারে ব্যাপক পরিচিতি পান যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পী হারভে। তার চেষ্টায় ১৯৯৯ সাল থেকে অক্টোবর মাসের প্রথম শুক্রবারটি ‘ওয়ার্ল্ড স্মাইল ডে’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। মুম্বাইয়ের চিকিৎসক ডাক্তার মদন কাটরা বিশ্ব জুড়ে হাসির ব্যায়ামের প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে ১০৫ টিরও বেশি দেশে অসংখ্য হাসির ক্লাব আছে। এছাড়া ২০১৮ সালে বাংলাদেশে হাস্য উজ্জ্বল ফোরাম (হাইফো) নামে একটি হাসির সংগঠন গঠন করা হয়।
কখনও কখনও একটা হাসি পুরোটা দিনকে উজ্জ্বল করে দিতে পারে। তবে এর মানে বেশ গভীর। একটা হাসিমুখের জন্যই আমরা সব ধরণের চেষ্টা করি। যেমন সকাল সকাল উঠে পড়তে বসে যাওয়া, যেন মা-বাবা আমাদের ওপর খুশি থাকেন। আবার মা-বাবাও সারাদিন কত কষ্ট করেন যেন আমরা হাসিখুশি থাকতে পারি। হাসিমুখ দেখলে, সব কিছু ভালো লাগতে থাকে। বিজ্ঞানসম্মত ভাবে দেখা গেছে, হাসলে মানুষের শরীর রিলাক্সড হয়। তার ফলে টেনশন কমে যায়। প্রাণখোলা হাসি হাসতে পারলে টেনশন রিলিজ হয়ে যাওয়ায় হার্টের পক্ষে খুব উপকারী। উচ্চ রক্তচাপ, ব্লাড সুগার এবং যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে প্রাণখোলা হাসি দারুণ দাওয়াই। হাসি স্ট্রেস হরমোন কমিয়ে মানসিক চাপ কমাতে খুব সাহায্য করে। শরীরের ক্ষতিকর এন্টিবডিগুলোকে প্রতিরোধ করে। জীবনে হাসির প্রয়োজন অনস্বীকার্য। হাসি মন ভালো করে দেয়। টেনশন কমাতে তাই হাসি চাই। হাসি মানুষকে নীরোগ জীবন দান করে।
চার থেকে পাঁচ রকম হাসির ব্যায়াম করা হয়। প্রথমে হাত দুটোকে বুকের সামনে ও পেছনে সঞ্চালন করে পাঁচবার হো-হো, হা-হা করে হাসি। এরপর হাত দুটো মাথার ওপর তুলে হো-হো করে হাসি। দ্বিতীয় হাসি খিলখিল করে অঙ্গভঙ্গি করে হাসি। তৃতীয় হাসি জিভ বের করে চোখ দুটো বড় করে হ্যা হ্যা করে হাসি। এতে থাইরয়েড গ্লান্ড এ চাপ পড়ে ও টন্সিল, থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ন্ত্রিত হয়। এরপরের হাসি মুখ ফুলিয়ে শব্দ না করে প্রচণ্ড হাসি। তারপরের হাসি মুখ খুলে প্রচণ্ড জোরে শব্দহীন হাসি। প্রতিটি হাসির একটু প্রাণায়াম করে মনকে স্থির ও শরীরকে বিশ্রাম দিতে হয়। হাসির ব্যায়ামের সঙ্গে বিভিন্ন ফ্রি হ্যান্ড এক্সেসাইজ করতে হয়।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, হাস্য উজ্জ্বল ফোরাম (হাইফো)