সম্পাদকীয়

  ২৩ জুন, ২০২১

খাল পরিষ্কারে সুফল আসতে শুরু করেছে

প্রতিটি কর্মের মূলে রয়েছে একটি সদিচ্ছা। এ ইচ্ছাই কর্মকে যেকোনো অবস্থানে নিয়ে দাঁড় করাতে পারে। বহু বছর ধরে ঢাকা মহানগর একটি জলাবদ্ধ নগর হিসেবে চিহ্নিত হয়ে এসেছে। এখনো সে তকমা সরে যায়নি। তবে, এখন তা ধীরে হলেও সরে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞসহ ঢাকার বাসিন্দারা। আগে দুর্ভোগের যেন শেষ ছিল না। একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি ভাঙতে হতো নগরবাসীকে। এসব পানি সরতে ৫-৭ দিন সময়ের প্রয়োজন হতো। গত বছর ওয়াসার কাছ থেকে খালগুলো সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের পর ঢাকা দুই সিটি করপোরেশন খাল ও ড্রেন সংস্কারে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে। জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এরই মধ্যে সংস্থা দুটি খালগুলো থেকে লাখ লাখ টন বর্জ্য অপসারণ করেছে। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে খালের জমি উদ্ধার করেছে এবং উভয় কার্যক্রম সমান গতিতে অব্যাহত রয়েছে। ফলে গত বছরের তুলনায় এবার বর্ষা মৌসুমের শুরুতে ঢাকাবাসী জলাবদ্ধতা যে দেখেনি তা নয়, তবে সে জলাবদ্ধতা বেশি সময় থাকেনি, সরে গেছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে। এটাই হচ্ছে ইচ্ছাশক্তির ক্ষমতা ও দক্ষতা। এই ইচ্ছাশক্তির অভাবে দীর্ঘ সময়ে ওয়াসা যা করতে পারেনি, সিটি করপোরেশন তা করে দেখিয়েছে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছাও প্রণিধানযোগ্য।

তথ্য মতে, ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে পাওয়ার পর খাল পরিষ্কার ও দখলমুক্ত করার কার্যক্রম হাতে নেয় দক্ষিণ সিটি। এরই মধ্যে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ ওয়াসার কাছ থেকে ১৪টি খালের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করে। গত আড়াই মাসে তারা এসব খাল থেকে ১০ হাজার ৪০০ টন বর্জ্য অপসারণ করে। এ ধারা অব্যাহত রেয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এ প্রকল্পের কাজ মাঝপথে থেমে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। যদিও আমরা ঘরপোড়া গরু। তাই শঙ্কা পিছু ছাড়তে চায় না। অন্তত ঢাকাকে নান্দনিক করার প্রশ্নে এ যাবৎ যে কার্যক্রম ঢাকাবাসী প্রত্যক্ষ করেছে, তাতে তারা আশান্বিত। তারা মনে করছে, এ কার্যক্রম যথাযথভাবে শেষ হলে এ শহর যে একটি নান্দনিক শহরে পরিণত হবে, তাতে সন্দেহের সব অবকাশ তিরোহিত হবে।

এদিকে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ মহানগরের ৩১ এলাকাকে জলাবদ্ধপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব এলাকার পানি সরানোর জন্য নতুন করে ড্রেনেজ লাইন তৈরির কাজ চলছে। এর মধ্যে আট এলাকার কাজ শেষ হয়েছে। শেষ হওয়া স্থানে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কোনো পানি জমেনি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এভাবে কাজ চলতে থাকলে দ্রুতসময়ের মধ্যে ৩১টি স্পটের অবস্থা একটি সুন্দরতম অবস্থানে যেতে বাধ্য। আমরা আশা করতেই পারি, তাদের এই বক্তব্য শুদ্ধতম হবে। আমরা মনে করি, দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকায় এই মহানগর প্রায় একটি ডাস্টবিনের কাছাকাছি পর্যায়ে পৌঁছেছিল। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যে ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন ছিল প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। আর ডিএনসিসি তার ইতিবাচক দৃশ্যায়ন ঘটিয়েছে। এজন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাতেই পারি। দেশের প্রতিটি প্রকল্পে এ ধরনের ইচ্ছাশক্তির প্রতিফলন ঘটুক—এটাই জাতির প্রত্যাশা।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
খাল পরিষ্কার,সুফল,সম্পাদকীয়
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close