সম্পাদকীয়

  ১০ জুন, ২০২১

স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে নতুন চিন্তাকে স্বাগত

স্বাস্থ্য খাতের অবস্থা ভালো নয়। বিষয়টি সবারই জানা। জানার পরও এতকাল এর পরিবর্তনে কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। গড্ডলিকা প্রবাহের মধ্য দিয়েই চলে এসেছে এর সব কার্যক্রম। তাই সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও বেড়েছে। সব কিছুরই একটা সীমা আছে। সম্ভবত স্বাস্থ্য খাত সেসব সীমাকে অতিক্রম করেছে বলেই আজ নতুন করে সরকারকে ভাবতে হচ্ছে। সরকার ভেবেছে এবং স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে ক্রাশ প্রোগ্রামের কথা জানিয়েছে। এই খাতের টেকসই উন্নয়নে সময়মতো মানসম্পন্নভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন জোরদার করা ও কেনাকাটায় অনিয়ম রুখতে মাসব্যাপী ক্রাশ প্রোগ্রাম নিতে যাচ্ছে সরকার। তবে বাস্তবতার নিরিখে আমরা মনে করি, এই প্রোগ্রাম দীর্ঘায়িত হওয়া জরুরি। দীর্ঘায়িত করা না হলে এক মাস পর আবার জায়গার গুটি জায়গায় ফিরে আসার সম্ভাবনাই বেশি। এর নজির দেশের প্রতি ইঞ্চি ভূমিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

দুর্নীতির তকমা এখনো আমাদের শরীর থেকে নামেনি। বিশ্বের সেরা দশের মধ্যেই আমাদের অবস্থান। সরকার এখান থেকে ফিরিয়ে আনার কথা ভাবছে। ফিরিয়ে আনার জন্য নতুন কার্যক্রমের কথা ভাবছে। ভাবনাটা ইতিবাচক। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃৃক্ত নন। কিছু মানুষের অনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে দায় বহন করতে হচ্ছে সরকারসহ সবাইকে। এ দেশের মানুষ এ দায় থেকে মুক্তি চায়।

আমরা মনে করি, সাধারণ মানুষের আকাক্সক্ষার কথা মাথায় রেখেই সরকারের এই ভাবনা। সম্ভবত স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি প্রতিরোধে এটাই সরকারের পরীক্ষামূলক প্রথম পদক্ষেপ। পদক্ষেপের অংশ হিসেবে দেশের সব হাসপাতালে কোন ধরনের যন্ত্রপাতি রয়েছে এবং তার তালিকা তৈরি করে সে অনুযায়ী তা সরবরাহের দায়িত্ব পাবেন তৃতীয় কোনো এক পক্ষ। এতে কেনাকাটায় অনিয়মের লাগাম টেনে ধরা যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও কেনাকাটার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের ব্যবস্থাপনা ও দক্ষতায় সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে। এটি দূর করা সম্ভব হলে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে যেসব অভিযোগ রয়েছে তা কমে আসতে পারে। কেনাকাটা প্রশ্নে তাদের বক্তব্য, সরবরাহকারীর চাহিদার ভিত্তিতে। এ ধারা পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠানের চাহিদাভিত্তিক কেনাকাটা নিশ্চিত করতে পারলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। এছাড়া দেশের সব হাসপাতাল মূল্যায়ন করে কোন ধরনের যন্ত্রপাতি কী পরিমাণ প্রয়োজন তা চিহ্নিত করার পর সেগুলো ছাড়পত্র দেওয়া যেতে পারে। সরকারের ক্রাশ প্রোগ্রামের ভাবনায়ও বিষয়গুলো স্থান পেয়েছে। তারাও এ রকমটাই ভাবছে। আর এ কারণে দেশের সাধারণ মানুষ সরকারের এই ভাবনার সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করে বলে এ প্রোগ্রামের দীর্ঘায়ু কামনা করছে।

দুর্নীতির প্রশ্নে তারা মনে করে, এটি সমাজে আজ একটি দুরারোগ্য ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। তাই সংক্ষিপ্ত চিকিৎসায় এর নিরাময় সম্ভব নয়। দুটি পথে নিরাময় আসতে পারে। এক. সার্জারি। দুই. মেডিসিন। কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা হবে তা নির্ধারণ করার দায়িত্ব ডাক্তারের। এ ক্ষেত্রে সরকার। তবে আমরা মনে করি, দুটো পদ্ধতিকেই সমান্তরালে ব্যবহার করা যেতে পারে। এ দেশের ভুক্তভোগী মানুষ অনেক প্রত্যাশা নিয়ে আপাতত তাকিয়ে আছে ক্রাশ প্রোগ্রামের দিকে। তারা আশাবাদী, প্রত্যাশা পূরণের মধ্য দিয়েই প্রোগ্রাম সফল হোক। এটুকুই চাওয়া।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
উন্নয়ন,স্বাস্থ্য খাত,সম্পাদকীয়
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close