সম্পাদকীয়

  ১৭ মে, ২০২১

শঙ্কার মাঝেও থেমে নেই উন্নয়ন

দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। তথ্য-উপাত্ত এবং বাস্তব চিত্র সে কথাই বলছে। বাতাসে গুঞ্জন আছে তৃতীয় ঢেউয়ের। বিশ্বজুড়ে করোনার তাণ্ডব কম ক্ষতি করেনি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশও। তবে তুলনামূলক বিচারে এ দেশের মানুষ করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধে অনেকের চেয়ে ভালো ফল করেছে। সংক্রমণের মাত্রা এবং মৃতের সংখ্যাকে নাগালের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছে। যদিও বিশ্ব এখনো এই মরণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে চিকিৎসাসেবায় তেমন একটা সাফল্যের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেনি। এক বছরের বেশি সময় পার করার মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষ এখন করোনাভাইরাসকে জীবনের অংশ হিসেবে মেনে নিয়েই প্রতিরোধের কথা ভাবছে। প্রতিরোধের কথা বলতে গেলে সরকারের ভূমিকার কথা বলতে হয়। বাস্তবতার নিরিখে ভূমিকাকে ইতিবাচক বলতেই হয়। একটু দেরিতে হলেও মানুষ এখন মাস্ক ব্যবহার করায় নিজেকে অভ্যস্ত করে তুলেছে। সরকারের এই অর্জনকে আরো কিছু সময় ধরে রাখতে কোনো রকম শিথিলতাকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। প্রচারণার বিষয়টিকে আরো বেশি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে। তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা এখনো রয়েছে, এটি বিশেষজ্ঞদের ধারণা। আমাদেরও বটে। তাই আমরা চাই আরো কিছুকাল প্রতিরোধ এবং প্রতিরোধ; যা করোনার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত একমাত্র বিকল্প।

করোনা আমাদের জীবন কেড়ে নিয়েছে এ কথা যেমন সত্য, পাশাপাশি জীবনকে করেছে স্তব্ধ। বিশ্ব-অর্থনীতিকে করেছে শ্বাসরুদ্ধ। আমরাও এর ব্যতিক্রম হয়ে থাকতে পারিনি। এটাই বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতায়ও বাংলাদেশের মেরুদণ্ড ভেঙে পড়েনি। এ দেশের মানুষ এবং সরকার তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে মেরুদণ্ড সোজা রাখার চেষ্টা করেছে। সফলতাও কম নয়। উন্নয়ন কর্মযজ্ঞও থেমে নেই। তুলনামূলক বিচারে অনেকের চেয়ে আমাদের অর্থনীতি এখনো প্রশংসার দাবিদার। এতকাল ঢাকা মহানগরে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অবস্থা ছিল বেহাল। নানা দুর্ভোগে কাটাতে হয়েছে বর্ষা মৌসুম। তবে নগরবাসী এবার সেই দুর্ভোগের শিকার হবে না বলেই মনে করছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। আসন্ন বর্ষার আগেই রাজধানীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত রাখতে খাল পরিষ্কার করছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এরই মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ১৪টি খাল থেকে ১১ হাজার টন ময়লা অপসারণ করেছে। পাশাপাশি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সাতটি খাল ও দুটি বক্স কালভার্ট থেকে চার লাখ টন বর্জ্য অপসারণ করেছে। বর্ষার আগেই খালগুলো পরিষ্কার করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কর্তৃপক্ষ।

এদিকে পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, শুধু খাল পরিষ্কার করলেই হবে না, জলাভূমি ও বন্যাপ্রবাহ এলাকাকে সংরক্ষণ করতে পারলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির টেকসই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকা শহরকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে হলে শুধু খালের আন্তসংযোগ বাড়ানো কিংবা খালের কার্যকারিতা বৃদ্ধিই যথেষ্ট নয়। শহরের চারপাশে যেসব জলাশয়, জলাভূমি, প্লাবনভূমি, বন্যাপ্রবাহ এলাকা আছে; সেগুলোও সংরক্ষণ করা খুবই জরুরি। এ কাজ না করতে পারলে শহরে বৃষ্টির পানি জমবেই। পরিপূর্ণভাবে নিষ্কাশন সম্ভব হবে না।

আমরা মনে করি, ধাপে ধাপে করপোরেশন সেদিকেই এগিয়ে যাবে। কেননা, বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় ঢাকার আশপাশের জলাভূমি ও প্লাবনভূমি সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। করোনা মহামারির এই দুর্যোগকালীন আমরা তা মোকাবিলায় যেভাবে যতটুকু সফল হয়েছি, আগামীর যেকোনো বাধা অতিক্রমেও আমরা সফল হব এটিই আমাদের বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
উন্নয়ন,সম্পাদকীয়,দুর্ভোগ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close