reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১২ মে, ২০২১

সম্প্রীতির বন্ধনে ঈদুল ফিতর

পবিত্র রমজান মাসে দীর্ঘ এক মাসের সিয়াম সাধনার পর আনন্দের বার্তা নিয়ে এলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। পশ্চিম আকাশে শাওয়ালের একফালি চাঁদ দেখার মধ্য দিয়েই ধরাতলে নেমে এলো ঈদ। ঈদ মানে আনন্দ। অন্যান্য উৎসব থেকে ঈদের পার্থক্য হলো ছোট-বড়, ধনী-গরিব সবাই এর অংশীদার। সবার মধ্যে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার মধ্যে রয়েছে বণ্টনের এক অপার আনন্দ। ঈদের দিন ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে শামিল হয়ে মহান আল্লাহর মুখোমুখি হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করে। ঈদের আগের এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার মধ্য দিয়ে অপরের দুঃখ-কষ্ট বুঝতে সচেষ্ট হই। রোজার প্রধান লক্ষ্য ভোগ নয়। ‘ত্যাগ ও সংযম’-এর মধ্যেই পাওয়া যায় রমজানের মাহাত্ম্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ত্যাগের অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারলে তা হবে সবার জন্য কল্যাণকর এবং পবিত্র রমজানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ।

এবারের ঈদ-উৎসব পালিত হতে যাচ্ছে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে। করোনাভাইরাসের কারণে পুরো জাতি আজ বিপর্যস্ত, যা ঈদের আনন্দকে অনেকটা ম্লান করে দিয়েছে। এবারের ঈদ উদযাপন করতে হবে যার যার জায়গায় বসে। কেননা যেকোনো অবস্থায় করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রমে অংশ নেওয়া নাগরিক হিসেবে আমাদের অন্যতম প্রধান একটি দায়িত্ব। এদিকে আমাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে অনেক সমস্যা আছে, আছে অনেক জটিলতা। তা সত্ত্বেও বিভিন্ন জাতীয় উৎসবে শ্রেণি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ শরিক হয়। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী প্রিয়জনকে নতুন পোশাক ও উপহারসামগ্রী কিনে দেয়। যারা সারা বছর জীর্ণ পোশাকে থাকে, তারাও ঈদের দিনে সন্তানদের গায়ে নতুন পোশাক পরাতে চায়। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের কারণে ঈদের এসব আনন্দ অনুভূতি থেকে বঞ্চিত থাকবেন অনেকেই।

ঈদের আনন্দ কেবল একা ভোগ করার নয়, গরিব-দুঃখী মানুষকে তাতে শামিল করতে হয়, এটিও ইসলামের শিক্ষা। এ কারণেই ধনীদের জন্য জাকাত ফরজ করা হয়েছে। ঈদের নামাজ আদায়ের আগেই ফিতরা দেওয়ার নিয়ম। ফিতরার উদ্দেশ্য, দারিদ্র্যের কারণে যাতে কেউ আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়, তার নিশ্চয়তা বিধান করা। সচ্ছলরা সঠিক নিয়মে জাকাত-ফিতরা দান করলে দরিদ্ররাও ঈদের খুশির ভাগ পেতে পারে।

সংযমের মাস রমজান। সেই সংযম আমরা কতটুকু মেনে চলি তার সঠিক কোনো তথ্য নেই। তবে বাস্তবতার দিকে তাকালে মনে হয়, সম্ভবত সংযম রক্ষায় আমরা যোজন যোজন মাইল দূরে অবস্থান করছি। রমজান সংযমের মাস হলেও অনেকে খাওয়া-দাওয়া ও কেনাকাটার পেছনে অঢেল অর্থ ব্যয় করেন। দরিদ্র স্বজন বা প্রতিবেশীর প্রতি অনেকে কোনো দায়িত্ব পালন করেন না। ব্যক্তিগত ভোগ-বিলাসে ব্যস্ত থাকেন। এটি ইসলামের বিধানের পরিপন্থী। ঈদ আসে সাম্যের দাওয়াত নিয়ে। অনেকে ধর্মের আনুষ্ঠানিকতাকে বড় করে দেখেন। এর মর্ম অনুধাবন করেন না। ইসলাম শান্তি, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে আনন্দ ও সম্প্রীতির বড় অভাব। ঈদুল ফিতরের আনন্দ সবাই ভাগাভাগি করে নেবে এটাই প্রত্যাশা। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।

পিডিএসও/ জিজাক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঈদ,সংযম,রমজান
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close