সম্পাদকীয়

  ২২ জানুয়ারি, ২০২১

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অভিনন্দন

গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন জো বাইডেন। অনেক উদ্বেগ, অনেক উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে কেটেছে কিছুটা সময়। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর সব উৎকণ্ঠার পরিসমাপ্তি ঘটেছে। কোনো অঘটন ঘটেনি। পরিশেষে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সব আস্ফালন বোবা কান্নায় পরিণত হয়েছে। খোদ আমেরিকানরা যেন আতঙ্কমুক্ত হয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে বিশ্বসম্প্রদায়। তারাও যেন তীর্থের কাকের মতো তাকিয়ে ছিল বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির দিকে। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের পর অনেকেই বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের জয় হয়েছে’। একই বাক্য বাইডেন তার ভাষণেও উল্লেখ করেছেন। শপথ অনুষ্ঠানে অঙ্গীকার করেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করবেন। বিশ্ব মৈত্রীই হবে তার লক্ষ্য।

এই অবস্থানে আসতে তাকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। ৩৩ বছরের প্রতীক্ষা শেষে রাজনীতির মঞ্চে স্বপ্নের চরিত্রে আবির্ভূত হলেন জো বাইডেন। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের পক্ষ থেকে তোমাকে অভিনন্দন। নজিরবিহীন নাটকীয়তার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন তিনি। তবে সহজেই নেতৃত্ব দিতে পারবেন এমন অবস্থা বাইডেনের জন্য রেখে যাননি পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাকে মোকাবিলা করতে হবে বর্ণবাদী বিভেদ, নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া করোনা পরিস্থিতি, বিপর্যস্ত অর্থনীতি, নজিরবিহীন বেকারত্ব আর বিশ্বরাজনীতি। তাই অভিষেক ভাষণে তিনি বলেছেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে তিনি এসব সংকট উত্তরণের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। বলেছেন, এই দিনটি আমেরিকার, দিনটি গণতন্ত্রের, ইতিহাসের এবং আশা-আকাক্সক্ষার। তিনি আরো বলেছেন, আমরা আরেকবার গণতন্ত্রের মূল্য উপলব্ধি করতে পেরেছি।

করোনা মহামারি এবং বিভাজনের রাজনীতি প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, শুধু মুখের কথায় এসব সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এজন্য গণতন্ত্রে সুপ্ত থাকা শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে হবে। এ সংকট মোকাবিলায় ঐক্যই একমাত্র উপায়। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, বাইডেন তার সততা, মেধা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে সব সংকট সরিয়ে আমেরিকাকে গণতান্ত্রিক নান্দনিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে সক্ষম হবেন। যদিও তার সামনের চ্যালেঞ্জগুলো অনেক বড়, তার পরও আমরা আস্থা রাখতে চাই। আমরা মনে করি, যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক বহুপক্ষ পরিবেশে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব ইতিবাচক ভূমিকায় এগিয়ে যাবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তা বিষয়ে তার ভূমিকা হবে সার্বজনীন। পাশাপাশি আমাদের সঙ্গে সহযোগিতার যে জায়গা, আগামী দিনে তা আরো সমৃদ্ধ হবে।

যুক্তরাষ্ট্র আবারও নেতৃত্বে ফিরে আসুক। বসবাসযোগ্য একটি পৃথিবী নির্মাণে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক। বৈষম্য দূর করে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য একটি অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরিতে মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হোক। আশা করি, দেশটির নেতৃত্বে আগামী দিনে জলবায়ুসহিষ্ণু পরিবেশে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী নির্মিত হবে। সেই নির্মাণকাজে বাংলাদেশও একীভূত হতে আগ্রহী। আশা করা যায়, জো বাইডেনের নেতৃত্বে আগামী বিশ্ব সব সংঘাত এড়িয়ে সার্বিক কল্যাণের পথে এগিয়ে যাবে। নিরাপত্তাহীনতার চাদর সরিয়ে নির্মল বাতাসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে। সম্ভবত বিশ্ববাসীর এটাই প্রত্যাশা।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
অভিনন্দন,মার্কিন প্রেসিডেন্ট,জো বাইডেন,সম্পাদকীয়
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close