সম্পাদকীয়
জিডিপির সাফল্য ধরে রাখতে হবে
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্য আজ বিশ্বের অনেক দেশের কাছে ঈর্শনীয়। স্বাধীনতার পরপর আমাদের শুনতে হয়েছিল এ দেশ হচ্ছে বটম্লেস বাস্কেট। সময়ের সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে বাংলাদেশ আজ যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে, সেখান থেকে পেছনে ফেরার কোনো রাস্তা খোলা নেই। দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে এটাই আজ ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যাশা। সেই প্রত্যাশা সামনে রেখে এগিয়ে চলেছে দেশ। মানুষের মেধা, শ্রম ও যোগ্য নেতৃত্বের ফসল আজকের বাংলাদেশ। বিশ্বদরবারে আমাদের মর্যাদা বেড়েছে। আমরা একটি মর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে গড়ে ওঠার পথের সন্ধান পেয়েছি। সামনে আলোর হাতছানি। আমাদের বিশ্বাস, সেখানে পৌঁছাতে আর বেশি সময়ের প্রয়োজন হবে না।
কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিবাচক ধারা ও সম্ভাবনা নিয়ে পূর্বাভাস আমরা পেয়েছি। আর এই পূর্বাভাসসমূহ দিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। এবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, আগামী বছরই মাথাপিছু মোট দেশজ উপাদনে (জিডিপি) বাংলাদেশ ভারতকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের (ডব্লিউইও) তথ্য মতে, ডলারের হিসাবে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ২০২০ সালে ১ হাজার ৮৮৮ ডলার হয়ে চার শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ভারতের মাথাপিছু জিডিপি ১০ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮৭৭ ডলারে নেমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে ভারতের মাথাপিছু জিডিপি ১০ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮৭৭ ডলারে নেমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এদিকে আইএমএফের পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি বছরে সবচেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা বিশ্বের তিন দেশের একটি হবে বাংলাদেশ। এই পূর্বাভাস আমাদের মানসিক শক্তিকে কতটা সমৃদ্ধ করেছে, মর্যাদাকে কতটা মহিমান্বিত করেছে, তা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। এই পূর্বাভাসকে স্মরণে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াটাই হোক আমাদের লক্ষ্য। আইএমএফের তথ্য মতে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। এগিয়ে থাকা দুটি দেশ গায়না ও দক্ষিণ সুদান।
উন্নয়নের যে ধারা অব্যাহত রয়েছে, তাকে ধরে রাখাটাই এখন রাষ্ট্র ও জাতির অন্যতম প্রধান কাজ। খেয়াল রাখতে হবে, এখান থেকে কোনোভাবেই আমাদের পদচ্যুতি না ঘটে। ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায়। আমাদের অবস্থাটাও অনেকটা সে রকম। দুর্নীতি হচ্ছে সেই সিঁদুরে মেঘ। সামাজিকভাবে দুর্নীতি যে অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে আমাদের সব স্বপ্ন কেবল স্বপ্নই থেকে যাবে। সরকার চেষ্টা করছে। কিন্তু সফলতা আমাদের চাহিদাকে স্পর্শ করতে পারেনি। আর সরকারের একক চেষ্টায় সমূলে উৎপাটন সম্ভব নয়। সরকারের পাশে দাঁড়াতে হবে পুরো জাতিকে। একই সঙ্গে সরকারকেও ধরতে হবে জনতার হাত। প্রয়োজন একটি আন্দোলন গড়ে তোলা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে। পাশাপাশি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সরকারকে নিতে হবে কঠোর আইনি পদক্ষেপ। আমরা আমাদের অর্জন ধরে রাখতে চাই। কোনোভাবেই চাই না হারাতে। তাই এখন থেকেই শুরু হোক প্রতিরোধ। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ। আসুন দুর্নীতিকে না বলি এবং দুর্নীতিবাজদের করি সামাজিকভাবে বয়কট।
পিডিএসও/হেলাল