সম্পাদকীয়

  ১৩ অক্টোবর, ২০২০

গতিশীল হোক দেশের অর্থনীতি

মহামারি করোনা দেশের সামগ্রিক কাঠামোতে আঘাত হেনেছে। বিশেষ করে মানুষের জীবন, জীবিকা ও কর্মে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব বাংলাদেশ এ সমস্যা কাটিয়ে উঠেছে। দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল ও সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ গোটা প্রেক্ষাপটকে পাল্টে দেয়। এরই মধ্যে মানুষ এর সুফল পেতে শুরু করেছে। আর অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর সচলতায় দেশব্যাপী বাড়ছে কর্মচাঞ্চল্য। এসব বিবেচনায় সার্বিকভাবে মহামারির প্রভাব কাটিয়ে পুনরুদ্ধার হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২০-২১ অর্থবছরের আগস্ট মাসের প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত আগস্ট মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ৩৬ শতাংশ। করোনার মধ্যেই গত মাসে ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আগের বছরের আগস্টে এই পরিমাণ ছিল ১৪৪ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। তাছাড়া আগের সব রেকর্ড ভেঙে জুলাইয়ে ২৬০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা যা আগের বছরের জুলাইয়ের তুলনায় প্রায় ৬৩ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। এ ছাড়া মহামরির মধ্যেও ব্যালেন্স অব পেমেন্টে বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে শুরু হয়েছে অর্থবছর। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহে দেখা যাচ্ছে চাঙাভাব। ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই থেকে আগস্ট) বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের পণ্য-বাণিজ্যে ঘাটতি কমেছে। মূলত আমদানির চেয়ে রফতানি বৃদ্ধির হার বেশি এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক থাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এতে লেনদেনের ভারসাম্যের ওপর চাপ কমেছে। উল্লিখিত সময়ে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট বা চলতি হিসাবের ভারসাম্যে উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩২৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। করোনাভাইরাসজনিত মহামারির মধ্যেও আশাব্যঞ্জক দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো। এসব বিবেচনায় একথা স্বীকার করতেই হবে দেশের অর্থনীতি বর্তমানে অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়া শুরু করেছে। এটি সম্ভব হয়েছে সরকারের সহায়তা ও সব পক্ষের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে।

বলা সঙ্গত, আসছে শীতে করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের কথা বলা হচ্ছে। সেটি মোকাবিলার জন্যও সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আন্তরিক উদ্যোগ থাকতে হবে। কারণ বর্তমানে অর্থনীতিতে যে গতির সঞ্চার হয়েছে সেটি যাতে কোনোভাবেই স্লথ না হয় সেদিকে অবশ্যই জোরালো উদ্যোগ থাকতে হবে। অন্যদিকে বর্তমানে অর্থনীতির জন্য মূল চ্যালেঞ্জ হলো দ্রুত কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। কারণ করোনাকালে অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন। তাদের আবার কাজে ফিরিয়ে আনা এখন অনেক বড় দায়িত্ব। এরই মধ্যে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এগুলোর যত দ্রুত বাস্তবায়ন হবে ততই দেশের মঙ্গল। আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
অর্থনীতি,সম্পাদকীয়,মহামারি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close