বিরল ঘটনা
অজ্ঞান না করেই স্তন ক্যানসারের অস্ত্রোপচার!
অস্ত্রোপচার চলছে। সঙ্গে মোবাইলে চলছে যন্ত্রসংগীত। যার অস্ত্রোপচার হচ্ছে, সেই রোগিণীর সঙ্গে কথাও বলছেন চিকিৎসকরা। এভাবেই হয়ে গেল স্তন ক্যানসারের প্রায় দেড় ঘণ্টার অস্ত্রোপচার কাটা-ছেঁড়ার ব্যথা বুঝতে পারলেন না রোগিণী।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) ভারতের রামপুরহাট মেডিকেলে এই সফল অস্ত্রোপচারের পরে খুশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মেডিকেল কলেজের এমএসভিপি পলাশ দাস বলেন, সাধারণত এমন অস্ত্রোপচার অজ্ঞান করেই হয়। বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞানে উন্নত পদ্ধতি প্রয়োগ হচ্ছে। রামপুরহাট মেডিকেলে এমন সেবা প্ৰমাণ করে, আমরাও পিছিয়ে নেই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালের অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের আরএমও অনিমেষ চট্টোপাধ্যায়, রাজকুমার মণ্ডল এবং মুহাম্মদ সফিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। শল্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদ্দাকাশ আলি অস্ত্রোপচার করেন। সহযোগিতা করেন শল্য বিভাগের চিকিৎসক বিবেক ঠাকুর এবং অভিষেক ঘোষ।
সাদ্দাকাশ বলেন, স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগিণীকে অজ্ঞান না করে অস্ত্রোপচার বিরল। এর জন্য অ্যানাস্থেটিস্টদের ধন্যবাদ। অনিমেষের কথায়, মাস দেড়েক আগে দক্ষিণ ভারতে গুটিকয়েক অস্ত্রোপচার এভাবে হয়। কলকাতায় এখনো হয়নি।
চিকিৎসকরা জানান, এই পদ্ধতিতে রোগীকে পুরো অজ্ঞান করার প্রয়োজন হয় না। ভেন্টিলেশনও লাগে না। অস্ত্রোপচারের পরে রোগী নিজেই হাঁটাচলা করতে পারেন। অন্যদিকে, অজ্ঞান করে অস্ত্রোপচার করলে জ্ঞান ফিরতে সময় লাগে। শারীরিক দিক থেকেও রোগীর ওপর ধকল হয়। রোগীকে হাসপাতালে বেশি দিন থাকতে হয় বলে খরচও বেশি হয়।
অনিমেষবাবু বলেন, মঙ্গলবার ওই রোগিণীর মেরুদণ্ডের ওপরের অংশে সূচ ফুটিয়ে শরীরের কিছু অংশ অবশ করা হয়। অস্ত্রোপচার চলাকালীন তার সঙ্গে চিকিৎসকরা প্রতি মিনিটে কথা বলেছেন। রোগীর মানসিক অবস্থা ঠিক রাখতে মোবাইলে যন্ত্রসংগীত শোনানো হয়েছে। তিনি ব্যথা বুঝতে পারেননি।
নলহাটির বাসিন্দা চল্লিশোর্ধ্ব ওই রোগিণী টিউমারের চিকিৎসা করাতে মাস তিনেক আগে হাসপাতালে আসেন। ক্যানসার ধরা পড়ার পরে চারবার কেমোথেরাপি করে টিউমারটি ছোট করা হয়। তারপরে এদিন অস্ত্রোপচার হয়। তিনি নিজেও জানালেন ব্যথা না-পাওয়ার কথা। তার কথায়, চিকিৎসকরা এমন উন্নত সেবায় আরও মানুষের উপকার করুন, এটাই চাই। সূত্র : আনন্দবাজার