লেখক: মিশাক আলী বুরহান
চর্চার মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব
দক্ষতা বা স্কিল এমন একটি বিষয় যা চর্চার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী দক্ষতাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কথা বলার দক্ষতা বা পাবলিক স্পিকিং। সঠিকভাবে কথা বলার ক্ষমতা একজন মানুষের ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ এবং তার মতামত বা চিন্তা অন্যদের সামনে উপস্থাপনের অন্যতম মাধ্যম হলো পাবলিক স্পিকিং এ পারদর্শী হওয়া। একজন দক্ষ বক্তা তার কথার মাধ্যমে মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে, শ্রোতাদের মন জয় করতে পারে এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
কথা বলা একটি অত্যন্ত মূল্যবান দক্ষতা। ভাষা ও কথা মানুষের অন্যতম প্রধান যোগাযোগের মাধ্যম। এটি কেবল ব্যক্তিগত বা সামাজিক জীবনেই নয়, বরং পেশাগত জীবনের উন্নতিতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কথা বলার মাধ্যমে আমরা আমাদের চিন্তা, অনুভূতি এবং পরিকল্পনা অন্যদের সামনে স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে পারি। যদি মানুষ কথা বলতে না পারত, তবে বর্তমান সমাজ এবং সভ্যতার অনেক দিক স্থবির হয়ে যেতো। মানুষ একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারত না, ফলে ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতো।
কথা বলার মাধ্যমে আমরা আমাদের চারপাশের মানুষদের প্রভাবিত করতে পারি, তাদের জীবনকে উন্নত করার জন্য পরামর্শ দিতে পারি এবং সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারি। সঠিকভাবে কথা বলা মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়ার অন্যতম প্রধান মাধ্যম। তবে, এই দক্ষতা অর্জন সহজ নয়। এর জন্য দীর্ঘমেয়াদী চর্চা ও অভ্যাস প্রয়োজন।
আমি গত দুই বছর ধরে পাবলিক স্পিকিং-এর চর্চা করছি, তবে এখনও মনে হচ্ছে যে সেই দক্ষতা অর্জন করতে পারিনি, যা মানুষের হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলবে। একজন ভালো বক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে কেবল কথা বলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়াই যথেষ্ট নয়, বরং শ্রোতাদের মনস্তত্ত্ব বুঝে সেই অনুযায়ী কথা বলতে হবে। কথা বলতে হবে এমনভাবে যাতে মানুষের অবচেতন মনে প্রভাব ফেলে এবং তাদের চিন্তায় আঘাত করতে পারে।
If you feel that this way then he or she is the best public speaker. Just blind to follow him. Reach him. Respect him. Lean from him. You will get forever peace. Inner peace. You can never buy this peace giving by money.
গতকাল "PSO" ও "H & H" এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত একটি অসাধারণ পাবলিক স্পিকিং আয়োজনের অংশ নিতে পেরে আমি খুবই অনুপ্রাণিত হয়েছি। এই আয়োজনটি ছিল একদম ভিন্নধর্মী এবং শিক্ষণীয়। এই আয়োজনে আমরা শিখেছি কীভাবে সুন্দরভাবে কথা বলা যায় এবং কীভাবে কথা বলে মানুষের হৃদয় জয় করা সম্ভব। বক্তৃতা একটি শিল্প, যা সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারলে মানুষের হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলে এবং তাদের মনের মধ্যে তা প্রভাবিত করে।
পাবলিক স্পিকিং শুধু ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্যই নয়, বরং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত কার্যকরী। বর্তমান সময়ে, চাকরি বা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে শুধু ডিগ্রি বা শিক্ষাগত যোগ্যতা যথেষ্ট নয়। এর সাথে সাথে ব্যক্তিগত দক্ষতা, বিশেষ করে যোগাযোগের দক্ষতা, অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যারা সঠিকভাবে কথা বলতে পারে এবং নিজের চিন্তাভাবনা স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করতে পারে, তারা কর্মজীবনে অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারে।
এক্ষেত্রে "বেকারত্ব হটাও" এই সংগঠনের কার্যক্রমও অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এই সংগঠনটি তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনা প্রদান করছে, যাতে তরুণেরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করে কর্মজীবনে সফল হতে পারে।
আমরা চাই, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাক এবং নিজের দক্ষতার সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সক্ষম হোক। "বেকারত্ব হটাও" এর মতো উদ্যোগগুলো আমাদের তরুণ প্রজন্মের মাঝে উদ্যম সঞ্চার করছে, যা বাংলাদেশকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
কথা বলার দক্ষতা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি এমন একটি দক্ষতা, যা সময় এবং চর্চার মাধ্যমে উন্নত হয়। শুধু ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, পেশাগত এবং সামাজিক ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কথা বলার ক্ষমতা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং আমাদেরকে আরও কার্যকরী এবং প্রভাবশালী করে তোলে।
প্রত্যেক মানুষের মধ্যে কমবেশি কিছু কথা বলার ক্ষমতা থাকে, তবে তা সঠিকভাবে চর্চা ও দিকনির্দেশনার মাধ্যমে উন্নত করা যায়। পাবলিক স্পিকিং দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত চর্চা, বক্তৃতা প্রদান, শ্রোতাদের যথাযথ মূল্যায়ন, এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে আরও দক্ষ করে তোলা।
অতএব, বলা যায় যে কথা বলার দক্ষতা একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্কিল, যা আমাদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা পালন করে। এটি শুধু আমাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতেই সাহায্য করে না, বরং সমাজে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যারা এই দক্ষতা অর্জনে আগ্রহী, তাদের জন্য "PSO" এবং "H & H" এর মতো উদ্যোগগুলো অত্যন্ত সহায়ক হবে। পাশাপাশি, কর্মসংস্থানের জন্য "বেকারত্ব হটাও" এর মতো সংগঠনগুলোর প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক হবে। সঠিকভাবে কথা বলা এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা ব্যক্তিগত সফলতার পাশাপাশি সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখতে পারি।