স্বাস্থ্যকর খাবার বেশি খাওয়া ক্ষতিকর কেন?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সবসময় পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ এ ধরনের খাবার স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং শরীরের সঠিক ক্রিয়াকলাপে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর খাবার গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পরও সেগুলো পরিমিত খেতে বলার কারণ কী? আপনি কি জানেন, স্বাস্থ্যকর খাবার অতিরিক্ত খেলে তা জাঙ্ক ফুডের মতোই বিপজ্জনক হতে পারে? বলা হয়ে থাকে, অতিরিক্ত সবকিছুই খারাপ। এর অর্থ হলো স্বাস্থ্যকর খাবারও অতিরিক্ত খেলে তা আপনার শরীরের বিভিন্ন ক্ষতির কারণ হতে পারে।
স্বাস্থ্যকর খাবার কীভাবে চিনবেন? যে খাবারটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ, তাকেই স্বাস্থ্যকর খাবার বলা হয়ে থাকে। স্বাস্থ্যকর খাবার, এমনকী কম ক্যালোরির খাবার অতিরিক্ত খাওয়া হলে তা বাড়তি ক্যালোরি যোগ করতে থাকে। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে যায়। স্বাস্থ্যকর বলেই যে বেশি খেলে বেশি উপকার পাবেন, এমনটা নয়। যে খাবারই হোক না কেন, কতটুকু খাওয়া যাবে তা জানা আপনার জন্য জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক স্বাস্থ্যকর খাবার বেশি খেলে কী ক্ষতি হয়-
১. বাদাম
বাদাম সম্প্রতি সুপারফুডের খ্যাতি অর্জন করেছে। এর অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এটি প্রোটিন, ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট দিয়ে ভরা যা একাধিক স্বাস্থ্য সুবিধা দেয়। এতে উচ্চ প্রোটিন এবং ফ্যাট থাকার কারণে খুব বেশি না খাওয়াই ভালো। সেইসঙ্গে প্যাকেটজাত বাদাম এড়িয়ে চলুন কারণ তাতে সোডিয়াম থাকে যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চিনাবাদাম, আখরোট, কিশমিশ এবং পেস্তার মতো বাদাম দিনে এক মুঠোর বেশি খাবেন না।
২. ফলমূল
ফলমূল সুস্বাদু এবং অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। এতে অনেক ধরনের ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিক্যালের উপস্থিতি থাকে। তবে যেকোনো ফল শুধুমাত্র পরিমিতভাবে খাওয়া হলেই বিভিন্ন স্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমায়। বেশিরভাগ ফলই ফ্রুক্টোজের মতো সাধারণ চিনিতে ভরা থাকে যা লিভারে চর্বি বৃদ্ধি করতে পারে। একসঙ্গে অনেক ফল খেলে, বিশেষ করে যেগুলোর উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স রয়েছে যেমন কলা, খেজুর, আনারস, আম এবং আঙ্গুর রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। এগুলো ইনসুলিনকে উস্কে দিতে পারে এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৩. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারকে টিস্যু, কোষ এবং হরমোনের বিল্ডিং ব্লক হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যা ছাড়া শরীর কাজ করতে পারে না। অতিরিক্ত প্রোটিন পাচনতন্ত্রের উপর অত্যধিক চাপ ফেলতে পারে, বিশেষ করে কিডনিতে প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়ার অর্থ হলো নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যাকে ডেকে আনা।
৪. পানি
সুস্বাস্থ্যের জন্য সঠিক হাইড্রেশন প্রয়োজন। তবে অতিরিক্ত পানি পান করলে তা শরীরের সোডিয়ামের মাত্রাকে পাতলা করে এবং কোষের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। কম সোডিয়ামের মাত্রার কারণে কোষে পানি ঢুকতে পারে যার ফলে মস্তিষ্ক ফুলে যায়। তাই যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই পানি পান করুন। পানি বেশি পান করার মানেই যে তা উপকারী, তা কিন্তু নয়।