নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৯ অক্টোবর, ২০২১

সুস্থ থাকতে প্রয়োজন সঠিক খাদ্যাভ্যাস, যোগ ব্যায়াম ও মেডিটেশন  

পোস্ট কোভিড স্ট্রেসের প্রভাব ৩০ বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। তবে এর থেকে উত্তরণে নিজেকে ভালো রাখতে মেডিটেশন, ইয়োগার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, করোনা পরবর্তী সময়ে সুস্থ থাকার জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন বিজ্ঞানসম্মত জীবনাচার। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, যোগ ব্যায়াম ও মেডিটেশন।

শনিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে আমেরিকান হেলথ এন্ড ওয়েলনেস সেন্টার 'ব্যাক ইন মোশন' এর উদ্যোগে পোস্ট কোভিড স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট শীর্ষক একটি সেমিনারের বক্তরা এ সব কথা বলেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন স্বনামধন্য চিকিৎসক স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডীন প্রফেসর, ডা. এম ইকবাল আর্সলান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী এস আই টুটুল।

আলোচনায় অংশনেন, ডা. মো. আবদুল্লাহ ইউসুফ, ড. তাজিয়া সরদার, নেচারপ্যাথ বিশেষজ্ঞ ও ইয়োগা ইনস্ট্রাকটর আহমেদ শরিফ, কোয়ান্টাম ফাউনডেশনের অর্গানিয়ার প্রাণজিত লাল শীল। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাংবাদিক মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ডা. এম ইকবাল আর্সলান বলেন, পোস্ট কোভিড স্ট্রেসের উত্তরণে নিজেকে ভালো রাখতে মেডিটেশন, ইয়োগার ওপর গুরুত্ব গুরুত্ব দিতে হবে। করোনা পরবর্তী সময়ে সুস্থ থাকার জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এর বিকল্প নেই।

সেমিনারটিতে পোস্ট কোভিড স্ট্রেস ম্যানেজম্যান্ট নিয়ে আলোচনা করেন ডা. মো. আবদুল্লাহ ইউসুফ। তিনি বলেন, পিটিএসডির সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। সাধারণ যেকেন ধরণের ট্রমাটিক ইভেন্ট, ট্রমা চলে যাওয়ার পরও তার প্রভাবটা জীবনে রয়ে যায়। যেমন, যদি কোনো সৈনিকের কথা চিন্তা করা হয়, যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পরও যুদ্ধের স্মৃতি, ভয়াবহতা কিছু ক্ষত বা প্রভাব জীবনে ফেলে যায়। এর কারণে অনিদ্রা, অনিশ্চয়তা, অনিরাপত্তা, আতঙ্ক ও একাকিত্বায় ভুগতে পারেন মানুষ।

তিনি বলেন, কোভিড নিজেই একটি স্ট্রেস বা ট্রমা। যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বা যারা করোনার সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য ফার্স্ট রেসপন্ডার হিসেবে কাজ করেছেন এমন যে কেউ পোস্ট কোভিড স্ট্রেসের মধ্য দিয়ে যেতে পারেন।

বিশেজ্ঞরা বলছেন, পোস্ট কোভিড স্ট্রেসের প্রভাব ৩০ বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। পোস্ট কোভিড স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়াকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। শারীরিক, মানসিক ও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি।

শারীরিক বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন নেচারপ্যাথ বিশেষজ্ঞ ও ইয়োগা ইনস্ট্রাকটর আহমেদ শরিফ। তিনি বলেন, শারিরীকভাবে সুস্থ ও ভাল থাকার জন্য ইয়োগার কোনো বিকল্প নেই। অনেকেই শরীরিক ফিটনেসকে বডি বিল্ডিংয়ের সাথে মিলিয়ে ফেলেন, যেটা ঠিক নয়। ইয়োগা চর্চার মাধ্যমে খুব কার্যকরীভাবে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের যত্ম নেয়া সম্ভব। কোভিডে যেহেতু ফুসফুস সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়, তাই দম চর্চার মাধ্যমে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা আরো বাড়ানো সম্ভব।

মানসিক উন্নয়ন ও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করেন কোয়ান্টাম ফাউনডেশনের অর্গানিয়ার প্রাণজিত লাল শীল। তিনি বলেন, মানসিক শক্তি, উন্নয়নের জন্য মেডিটেশন অনেক বড় ভূমিকা রাখছে। ধ্যান বা মেডিটেশন মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।

একই সাথে ভয়-ভীতি, আতঙ্ক, অনিশ্চয়তা থেকে মনকে মুক্ত করে। বাংলাদেশে মেডিটেশন বা ধ্যানের পথপ্রদর্শক কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। কোভিড পরবর্তী স্ট্রেস কাটাতে নতুন নতুন মেডিটেশন সেশন ও আলোচনার আয়োজন করছে ফাউন্ডেশনটি।

এছাড়াও মেডিটেশনে কিছু ব্রিদিং টেকনিক থাকে যা ফুসফুসকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে সহায়তা করে। এছাড়া মানসিক শক্তি ও আত্মিক উন্নয়নের ধ্যানের বিকল্প নেই। সেমিনারের শেষে একটি সংগীত সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। সংগীতশিল্পী এস আই টুটুলের গানে পুরো অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন অতিথিরা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
খাদ্যাভ্যাস,যোগ ব্যায়াম,মেডিটেশন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close