মনোজ কুমার সাহা

  ১২ ডিসেম্বর, ২০২২

গোপালগঞ্জে পাঁচ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ 

ব্যয় ১৩ কোটি টাকা 

প্রতীকী ছবি।

গোপালগঞ্জের পাঁচটি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য পাঁচটি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার। এখানে বীর মুক্তিযোদ্ধার মিলত হচ্ছেন। পরস্পরের সাথে কুশল বিনিময় করছেন। এখানে বসে তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের গীরত্বগাথা নিয়ে পুরনো দিনের স্মৃতি চারণ করছেন। তারা নতুন প্রজম্মকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনাচ্ছেন। তরুণ প্রজম্ম মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে পারছে। উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়।

গোপালগঞ্জের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক জানান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আর্থায়নে প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে গোপালগঞ্জর জেলার পাঁচ উপজেলা পাঁচটি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করেছে এলজিইিডি। এ ভবনের প্রবেশ পথের সুন্দর স্পেসে স্থাপন করা হয়েছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নয়নাভিরাম ম্যুরাল। তিনতলা বিশিষ্ট এ কমপ্লেক্স ভবনের ২টি ফ্লোর বাণিজ্যিক স্পেস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তৃতীয় ফ্লোর হল রুম হিসেবে ব্যাবহার করছেন আমাদের সমান্নিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এ কমপ্লেক্স থেকে আয়ের ১০ ভাগ টাকা ভবন রক্ষণা বেক্ষণের জন্য ব্যয় হবে। বাকি টাকা মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যয় হচ্ছে। এখানে মুক্তিযোদ্ধারা আড্ডা, পারিবারিক, সামাজিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিকসহ সব ধরনের অনুষ্ঠান করতে পারছেন। এটি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নতুন ঠিকানা করে দিয়েছে।

তরুণ প্রজম্মের নাগরিক গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষার্থী আহম্মেদ ইমতিয়াজ, শেখ সাব্বির ফয়সাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধ কমেপ্লেক্সে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনছি। তারা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাসকে আমাদের কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করছেন। এতে করে আমার মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারছি। সরকার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স করে দেয়ায় আমরা এ সুবিধা পেয়ে উপকৃত হচ্ছি। এতে করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুঁকে ধারণ করতে পারছি।

গোপালগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফার রহমান বাচ্চু বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলাদেশ পেয়েছি। এটি আমদের সবচেয়ে বড় অর্জন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই করেছেন। এখন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স করে দিয়েছেন। এখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল রয়েছে। জাতীয় দিবসসহ বিভিন্ন দিনে এ ম্যুরালে আমরা ফুল দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারছি। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স আমাদের নতুন ঠিকানায় পরিণত হয়েছে। এখানে বাসে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সুখ দুঃখের কথা বলছি। সময় কাটাচ্ছি। পরস্পরের সাথে কুশল বিনিময় করছি। এতে করে শেষ বয়সে এসে আমদের মধ্যের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হচ্ছে। এ সময় আমরা মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধের কথা স্মরণ করে গর্বিত হয়ে উঠছি। এখানে আমরা সব ধরণের অনুষ্ঠান করার সুযোগ পাচ্ছি। এটি আমাদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য সাধারণ উপহার। এ কমপ্লেক্স হওয়ার আগে আমাদের মধ্যে দেখা স্বাক্ষাত কম হতো। এটি করে দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে আমি ধন্যাবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

কাশিয়ানী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার আবুল কালাম উজির বলেন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে এক সাগর রক্ত, ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আমাদের সর্বোচ্চ মূল্যায় করেছে। তিনি মেধা ও শ্রমকে যুগলবন্দি করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন কছেন। স্বাধীনতা সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন। আমরা এখন শুখে শান্তিতে দিন কাটাচ্ছি। তিনি আমাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স করে দিয়েছে। এ জন্য প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি মুজিব বাহিনীতে গোপালগঞ্জে যুদ্ধ করেছি। সময় পেলেই মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে বসে নতুন প্রজম্মের কাছে যুক্তিযুদ্ধের গল্প বলে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস জানান দিচ্ছি। এতে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছে । সূত্র : বাসস এইচএস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
গোপালগঞ্জ,মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close