নববধূ মনিরা হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
রাজধানীর খিলক্ষেত থানা এলাকায় নববধূ মনিরা পারভীন হত্যা মামলায় ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে মনিরার স্বামী নাসির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক মাফরোজা পারভীন এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মনিরার স্বামী নাসিরের ভাই মাসুদ, বোন হাসিনা ও তার স্বামী মিলন, মিলনের ভাই দেলোয়ার হোসেন ও নাসিরের চাচা দীন ইসলাম। এরা সবাই জামিনে ছিলেন। আজ তারা আদালতে হাজিরা দেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৮ জুন বিকেল সাড়ে ৫টায় মনিরা ওষুধ কেনার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। পরিবারের সদস্যরা তার কোনো সন্ধান পাননি। পরদিন লোকমুখে জানতে পারেন, নাসির হোসেন কাজী অফিসে নিয়ে গিয়ে তাকে বিয়ে করেছে। একথা শোনার পর মনিরার বাবা মোস্তফা মেয়ের জামাই নাসিরের বাবা হাছেন আলীর কাছে মেয়েকে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন। তখন হাছেন আলী ক্ষিপ্ত হয়ে তার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকা না দিলে তার মেয়েকে খুনের হুমকি দেন তিনি। পরদিন নাসির মনিরাকে নিয়ে বাড়িতে আসার সাথে সাথে নাসিরের বাবা, মাসহ পরিবারের অন্যরা মিলে মনিরাকে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মারপিট, কিল, ঘুষি, মাথার চুল টেনে গুরুতর জখম করে পাশের একটি বালুর মাঠে ফেলে রাখেন। স্থানীয় লোকজন মনিরাকে উদ্ধার করে আশিয়ান সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২২ জুন সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনিরা মারা যান ।
এ ঘটনায় মনিরার বাবা মোস্তফা বাদি হয়ে খিলক্ষেত থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় নাসিরের বাবা, মা, চাচাসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা খিলক্ষেত থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) কেএম আশরাফ উদ্দিন। মামলার বিচার চলাকালে আট জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।