নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

মানবতাবিরোধী অপরাধ, মৃত্যুদণ্ড পাওয়া দুই আসামি গ্রেপ্তার   

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদ- পাওয়া পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন নকিব হোসেন আদিল সরকার ও মোখলেসুর রহমান মুকুল।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে র‌্যাব-২ রাজধানীর দক্ষিণখান ও আশুলিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাকচর গ্রামের ইউনুছ আলী নামক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নদী পারাপারে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা জুন-জুলাইয়ের দিকে ময়মনসিংহের ত্রিশালের আহমেদাবাদে একটি ক্যাম্প স্থাপন করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপারে সহযোগিতার কারণে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ আলীকে রাজাকারদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যান এবং রাজাকার ক্যাম্পের টর্চার সেলে নির্যাতনের পর ১৫ আগস্ট সকালে তাকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেন।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় শহীদ ইউনুস আলীর ছেলে ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের বিচারিক আদালতে নকিব হোসেন আদিল সরকার ও মোখলেছুর রহমান মুকুলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে আদালত বিচারিক কার্যক্রমের জন্য মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠান। ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলা রুজু হয়।

খন্দকার আল মঈন আরো বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সালে অভিযোগের তদন্ত শেষে তদন্ত সংস্থা নকিব হোসেন ও মোখলেছুরসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। গত ২৩ জানুয়ারি নকিব হোসেন ও মোখলেছুরসহ সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। দুজন আসামি রায়ের আগেই স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার নকিব হোসেন ও মোখলেছুর ২০১৫ সালে মামলার তদন্তকাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই পলাতক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে তারা আত্মগোপনে চলে যান। গ্রেপ্তার এড়াতে নকিব রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এবং মোখলেছুর আশুলিয়া ইপিজেড এলাকায় বিভিন্ন ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। তারা দুজনই একাধিকবার বাসা পরিবর্তন করেন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মানবতাবিরোধী অপরাধ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close