নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৪ ডিসেম্বর, ২০২২

তিন ইসলামী ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি, কী ব্যবস্থা জানতে চায় হাইকোর্ট

প্রতীকী ছবি।

ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ঋণ নিয়ে কেলেঙ্কারির অভিযোগ অনুসন্ধান করে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) , পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। অনুসন্ধানে কিছু পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাও জানাতে বলা হয়েছে। আগামী বছরের ৫ এপ্রিল শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছেন আদালত। তিনটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আসার পর রবিবার (৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ এ আদেশ দেন।

ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’ শিরোনামে গত ২৪ নভেম্বর একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ইসলামী ব্যাংকের ৭,২৪৬ কোটি টাকা ঋণের তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংক শিরোনামে গত ২৯ নভেম্বর আরেকটি দৈনিকে এবং এস আলম গ্রুপ একাই আইবিবিএল থেকে ত্রিশ হাজার কোটি টাকা ঋণ তুলেছে শিরোনামে গত ৩০ নভেম্বর আরো একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। পৃথক প্রতিবেদন আদালতের নজরে আসে। আদালতে দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন শুনানিতে ছিলেন।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ওঠা অভিযোগের সত্যতা বিষয়ে এবং ঋণ নেওয়া সংক্রান্ত নথি আদালতে দাখিল করতে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ঋণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের নামের তালিকা আদালতে দাখিল করতেও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রুলে অভিযোগে জড়িতদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। অর্থ সচিব, দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএফআইইউ ও সিআইডিসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুয়া ঠিকানা ও কাগুজে দুই কোম্পানি খুলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) থেকে দুই হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে একটি অসাধু চক্র।

সব মিলিয়ে নানা উপায়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। আটটি প্রতিষ্ঠানের নামে চলতি বছরেই এ অর্থ নেওয়া হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ তুলে নেওয়া হয় চলতি মাসের ১ থেকে ১৭ নভেম্বর। যার পরিমাণ ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। এ জন্যই ব্যাংকটির কর্মকর্তারা চলতি মাসকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’ বলে অভিহিত করছেন।

একইভাবে বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকেও ২ হাজার ৩২০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে এ কোম্পানিগুলো। ফলে এ তিন ব্যাংকের কাছে প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদসহ দেনা বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। এমন সময়ে এসব অর্থ তুলে নেওয়া হয়, যখন ব্যাংক খাতে ডলার-সংকটের পর টাকার সংকট বড় আলোচনার বিষয়। ব্যাংক তিনটির নথিপত্র পর্যালোচনা করে এ সব তথ্য মিলেছে। কে/এইচএস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ইসলামী ব্যাংক,আদালত,হাইকোর্ট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close