অভিষেকের আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি চান ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি। অর্থাৎ আসছে জানুয়ারির ২০ তারিখ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হচ্ছেন তিনি।
তবে নিজের শপথগ্রহণের আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে চান ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান পার্টির রাজনীতিবিদ লিন্ডসে গ্রাহাম এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়টি প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে গ্রাহাম বলেন, গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি এবং সেখানে যুদ্ধবিরতির জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এমনকি তিনি চাইছেন, প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগেই যেন এ ব্যাপারে সুরাহা হয়।
এক্সিওসকে দেওয়া সাক্ষাৎতকারে গ্রাহাম আরও বলেন, ইসরায়েলের সরকার এবং জনগণকে আমি বলেছি যে এই মুহূর্তে ট্রাম্প জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারটি মনোযোগের কেন্দ্রে নিয়ে আসতে চাইছেন। আমি যদ্দুর বুঝতে পারছি, ক্ষমতা হস্তান্তরের এই সময়টিতে এ ইস্যুতে ট্রাম্প এবং বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করবে।
গত সপ্তাহে লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন সরকার। সেই চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকেই গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আগের চেয়ে বেশি মনযোগী হয়েছে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন নেতানিয়াহু। সেই সাক্ষাতে ট্রাম্প বলেছিলেন, যদি তিনি নির্বাচনে জিতে যান— তাহলে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের আগেই গাজায় যুদ্ধের অবসান দেখতে ইচ্ছুক তিনি। তবে ট্রাম্প এও বলেছিলেন যে তিনি চান ইসরায়েল বিজয়ী হোক এবং যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জিম্মি করেছে, তাদেরকে চড়া মূল্য দিতে হবে।
২০২৩ সালে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। ভয়াবহ এ অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৪৪ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও এক লক্ষাধিক।
এই জিম্মিদের মধ্যে ১০৭ জনকে গত বছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঘোষিত এক অস্থায়ী বিরতিতে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। তারপর গত এক বছরে কয়েক জন জিম্মিকে উদ্ধার করতে পেরেছে ইসরায়েলি বাহিনী, কয়েকজন নিহতও হয়েছেন। বর্তমানে হামাসের কব্জায় ১০১ জন জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পিডিএস/এমএইউ