reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ মার্চ, ২০২৩

দক্ষিণ চীন সাগরে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে শি’র মস্কো সফর

ছবি : সংগৃহীত

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মস্কো সফর আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দক্ষিণ চীন সাগরে। এই সফরে ইউক্রেন ইস্যু সর্বাধিক গুরুত্ব পেলেও, ধারণা করা হচ্ছে তাইওয়ানে চীনের সম্ভাব্য সেনা অভিযানে ঘনিষ্ঠ বন্ধু পুতিনের সমর্থন চাইতে পারেন শি।

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানে অনুপ্রাণিত হয়ে তাইওয়ানে সামরিক অভিযান চালাতে পারে চীন, গত বছর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এ অবস্থায় ইউক্রেনে মস্কোর অভিযানে নড়েচড়ে বসে পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে পরিচিত চীনবিরোধী দেশগুলো। এর আগে তাইওয়ানে বেইজিংয়ের সম্ভাব্য হামলার বিষয়টি নিয়ে ততটা মাথা ঘামায়নি তারা।

তবে ইউক্রেনে রুশ অভিযান হঠাৎ করেই অস্বস্তি বয়ে আনে দক্ষিণ চীন সাগরে। পশ্চিমা দেশগুলোর মনোযোগ ইউক্রেনে থাকার সুযোগে তাইওয়ানে হামলা চালিয়ে বসতে পারে চীন, এমন আশঙ্কা প্রবল হয়ে ওঠে এই অঞ্চলের মার্কিন মিত্রদের মধ্যে।

যুগ যুগ ধরেই তাইওয়ানকে নিজেদের ‘রেডলাইন’ হিসেবে মনে করে চীন। বেইজিং বারবার হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে একীভূত না হলে তাইপের ওপর বল প্রয়োগ ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না তাদের সামনে। এ অবস্থায় সত্যিকারের চীনা সেনা অভিযানের আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে তাইওয়ানকে।

শঙ্কা বাড়ছে কেন : বিশেষ করে তাইওয়ান প্রশ্নে পূর্বসূরীদের থেকে অনেক বেশি আগ্রাসী অবস্থান নিয়েছেন চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর তার মূল এজেন্ডায় রয়েছে তাইওয়ানের একত্রীকরণ। আর এ ব্যাপারে তাকে অনুপ্রাণিত করছে তার মিত্র রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বলা হচ্ছে, ঘনিষ্ঠ বন্ধু পুতিনের ইউক্রেন অ্যাডভেঞ্চার একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে উৎসাহী করছে জিনপিংকে।

তাইওয়ান ঘিরে বেড়ে যাওয়া চীনা সামরিক তৎপরতায় ফুটে উঠছে বিষয়টি। অঞ্চলটিতে নিয়মিত সেনা মহড়ার চালাচ্ছে বেইজিং, প্রায় নিয়মিতই তাইপের আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে চীনা যুদ্ধবিমান। এ অবস্থায় ২০২৬ সালের মধ্যেই তাইওয়ানে হামলা চালাতে পারে চীনা বাহিনী- এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা।

এমন পরিস্থিতিতে শি জিনপিংয়ের রাশিয়া সফরকে কেন্দ্র করে তাইওয়ান ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন সমীকরণ। চীনা প্রেসিডেন্টের মস্কো সফরে ইউক্রেন ইস্যুই গুরুত্ব পাচ্ছে বলে মনে করা হলেও, ইউক্রেনে রাশিয়াকে সমর্থন দেয়ার বিনিময়ে তাইওয়ান প্রশ্নে সহযোগিতা চাইতে পারেন শি জিনপিং, ধারণা করা হচ্ছে এমনটাও।

পাশাপাশি ইউক্রেন অভিযানের সামরিক অভিজ্ঞতাও বেইজিংয়ের সঙ্গে বিনিময় করতে পারে মস্কো। এছাড়া ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত চীনা প্রযুক্তি ও অস্ত্র সামগ্রীর কার্যকারিতার ব্যাপারেও মস্কোর কাছ থেকে অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে চীন, যা কাজে দেবে তাইওয়ানে তাদের সম্ভাব্য অভিযানে।

সব মিলিয়ে মস্কোতে চীনা প্রেসিডেন্টের এই সফরে ইউক্রেনের পাশাপাশি নির্ধারিত হতে পারে তাইওয়ানের ভাগ্যও, মনে করা হচ্ছে এমনটাই।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চীন,শি জিনপিং,মস্কো,পুতিন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close