reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩

লাদাখ নিয়ে সংঘাতের শঙ্কা বাড়ছে ভারত-চীনের

ফাইল ছবি

বিতর্কিত লাদাখ সীমান্ত এলাকায় বেইজিং সামরিক স্থাপনা গড়ে তোলায় সেখানে ভারতীয় ও চীনের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মাঝে আরও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। লাদাখের হিমালয় অঞ্চলের সীমান্ত এলাকা নিয়ে ভারতীয় পুলিশের এক নিরাপত্তা পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। শুক্রবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে, ২০২০ সালে পশ্চিম হিমালয়ের লাদাখে এশিয়ার দুই জায়ান্ট ভারত-চীনের সেনাবাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৪ সৈন্যের প্রাণহানি ঘটে। পরে দফায় দফায় সামরিক এবং কূটনৈতিক দীর্ঘ আলোচনায় সেই উত্তেজনা হ্রাস পায়।

তবে সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে হিমালয়ের পূর্বাঞ্চলের অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে দুই দেশের সৈন্যদের মাঝে নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। যদিও এই সংঘর্ষে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

নতুন ওই পর্যালোচনা লাদাখ পুলিশের গোপনীয় গবেষণাপত্রের অংশ, যা গত ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত দেশটির শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের এক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়। ওই সম্মেলনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল উপস্থিত ছিলেন।

একই গবেষণাপত্রে চীনের সাথে দীর্ঘদিনের বিরোধপূর্ণ লাদাখ সীমান্তের পূর্বাঞ্চলীয় ৬৫টি টহল পয়েন্টের মধ্যে অন্তত ২৬টিতে প্রবেশের অধিকার ভারত হারিয়েছে বলেও জানানো হয়। ভারতের কেন্দ্রশাসিত লাদাখের জ্যেষ্ঠ একজন পুলিশ কর্মকর্তা গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেন।

লাদাখের প্রধান শহর লেহের পুলিশ সুপার পিডি নিত্য চীনের সাথে ভারতের বিতর্কিত সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা নিয়ে চলমান উত্তেজনার মাঝে নতুন এসব উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ করেছেন। রয়টার্স এই গোপনীয় গবেষণাপত্র পর্যালোচনা করেছে বলে জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় পুলিশের সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্য এবং কয়েক বছর ধরে ভারত-চীন সামরিক উত্তেজনার বৈশিষ্টের ভিত্তিতে ওই পর্যালোচনা তৈরি করা হয়েছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে সম্মেলনে জমা দেওয়া ওই পর্যালোচনা তাৎপর্যপূর্ণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি ভারতীয় সেনাবাহিনী। এমনকি দেশটির প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

অন্যদিকে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ভারতের পথে হেঁটে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

গবেষণা পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ বাধ্যবাধকতার পরিপ্রেক্ষিতে... চীনে এবং এই অঞ্চলে তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) সামরিক অবকাঠামো নির্মাণ অব্যাহত রাখবে। এমনকি এ নিয়ে ভারতীয় সৈন্যদের সাথে পিএলএর সংঘর্ষও ঘন ঘন হবে; যা বিশেষ কোনও ধাঁচ অনুসরণ করতে পারে বা নাও পারে।

এতে বলা হয়েছে, ‘যদি আমরা সংঘর্ষ এবং উত্তেজনার ধরন বিশ্লেষণ করি, তাহলে ২০১৩ থেকে ২০১৪ সালের পর থেকে প্রতি ২-৩ বছরের ব্যবধানে সীমান্তে তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভারত ও চীনের মাঝে সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটারের বিতর্কিত সীমান্ত আছে। ১৯৫০র দশক থেকে এই সীমান্ত নিয়ে অসংখ্যবার সংঘাতে জড়িয়েছে উভয় দেশের সামরিক বাহিনী। এমনকি এশিয়ার এই দুই জায়ান্ট সীমান্ত নিয়ে দুবার সরাসরি যুদ্ধেও জড়িয়েছে।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ভারত,চীন,লাদাখ,টহল পয়েন্ট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close