reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ডলারের দাপটে মন্দা মুদ্রা ও স্বর্ণের বাজার

ছবি : সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে দাপট দেখাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার। এর বিপরীতে অন্যান্য মুদ্রার মান কমছেই। গত সপ্তাহ রেকর্ড দরপতনের মধ্য দিয়ে পার করেছে ইউরো, পাউন্ড, ইয়েন, ইউয়ান ও রুপি। স্বর্ণের দামও কমেছে। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

শক্তিশালী ডলার : মার্কিন ডলার এখন আগের চেয়েও শক্তিশালী। গত শুক্রবার ডলার সূচক ডিএক্সআই সপ্তাহ শেষে প্রায় ১ শতাংশ বেড়ে ২০০২ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। ইউএস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদহার বৃদ্ধি এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

২০ বছরের সর্বনিম্নে ইউরো : কয়েক সপ্তাহ আগেও এক ইউরোতে ১ ডলারের বেশি পাওয়া যেতো। ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে গত ৬ মাস ধরে ক্রমাগত কমছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) ১৯ দেশের মুদ্রামান। গত শুক্রবার ১ ইউরোর বিনিময় মূল্য ৯৭ সেন্টে নেমে আসে। ২০০২ সালের অক্টোবরের পর মুদ্রাটির মূল্য এত কমেনি কখনও।

ঝুঁকির মুখে পাউন্ড : ঝুঁকির মুখে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মুদ্রা ব্রিটিশ পাউন্ডও। ওই দিন ডলারের বিপরীতে মুদ্রাটির ২ শতাংশ দরপতন হয়। ১ পাউন্ডের বিনিময় হার নেমে আসে ১ দশমিক এক ডলারে। ডলারের বিপরীতে যা ৩৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে ইতোমধ্যে করছাড় এবং বিপুল বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটেন সরকার। এরপরই মুদ্রাটির এ পতন ঘটে।

অস্থির ইয়েন : এশিয়ার সবচেয়ে বড় অর্থনীতি জাপানও মুদ্রার মান ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। গত ২৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পতনের পর মূল্য বাড়াতে বাজার থেকে ইয়েন কিনতে শুরু করে দেশটির সরকার। ১৯৯৮ সালের পর এ প্রথম এমন পদক্ষেপ নিয়েছে জাপানি কর্তৃপক্ষ। এতে শুক্রবার নাগাদ কিছুটা দর ফিরে পেয়েছে মুদ্রাটি। প্রতি ডলার বিক্রি হয় ১৪২ দশমিক ৯৭ ইয়েনে।

বাজে অবস্থা রুপির : চলতি সপ্তাহে ডলারপ্রতি ভারতীয় মুদ্রামান ৮১ রুপিতে নেমে আসে। যা সর্বনিম্ন দরপতনের রেকর্ড। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিশ্ব বাণিজ্যের অস্থিরতার প্রভাবে হিমশিম খাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ অর্থনীতির মুদ্রাটিও। সব মিলিয়ে শুধু গত সপ্তাহেই রুপি দেড় শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে।

ধাক্কা সামলাতে পারছে না ইউয়ানও : গত শুক্রবার ২৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল পরিস্থিতিতে পড়ে চীনা মুদ্রা। সপ্তাহের হিসাবেও গত ৪ মাসের মধ্যে ইউয়ানের সর্বোচ্চ দরপতন ঘটে। ওই দিন প্রতি ডলারের বিপরীতে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (পিবিওসি) বেঁধে দেয়া দাম ছিল প্রায় ৭ ইউয়ান। ২০২০ সালের ৩ আগস্টের পর যা সর্বনিম্ন।

ঊর্ধ্বমুখী রুবল : বিভিন্ন দেশের মুদ্রা খাবি খেলেও রাশিয়ার রুবল উর্ধ্বমুখী ধারা বজায় রেখেছে। গত জুলাইয়ের পর ডলার ও ইউরোর বিপরীতে ওই সপ্তাহে রুশ মুদ্রা সবচেয়ে বেশি সবল হয়েছে। প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ৫৬ দশমিক ৭৯ রুবলে। দাম বেড়েছে সাড়ে ৩ শতাংশ। আর প্রতি ইউরো বিক্রি হয়েছে ৫৫ দশমিক ০৫ রুবলে। মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।

গুরুত্ব হারাচ্ছে স্বর্ণ : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক মন্দায় ‘বিনিয়োগের নিরাপদ স্বর্গ’ হয়ে উঠেছে স্বর্ণ। দামের ক্ষেত্রে ডলারের সঙ্গে বরাবরই যার বিপরীত সম্পর্ক। মার্কিন মুদ্রার রেকর্ড মূল্য বৃদ্ধিতে তাই বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণ হারাচ্ছে স্বর্ণ। শুক্রবার বিশ্ববাজারে দেড় শতাংশের বেশি কমে আউন্স প্রতি স্বর্ণের দর। ১৬৪২ ডলারে ঠেকেছে তার দাম। ২০২০ সালের এপ্রিলের পর যা সবচেয়ে কম।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ডলার,স্বর্ণ,রুবল,ইয়েন,পাউন্ড,ইউরো,মন্দা বাজার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close