হিজাব বিতর্কে কর্ণাটকে স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা
ভারতের কর্ণাটকে হিজাব-বিতর্কের জেরে রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ আগামী তিন দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই নিজেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে তিনি টুইট করে জানান, ‘শান্তি ও সম্প্রীতির স্বার্থে’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে তিনি সবাইকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান।
সম্প্রতি কর্ণাটক রাজ্যের উদুপি জেলায় একটি সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম-সংক্রান্ত কিছু নিয়ম জারি করে। বলা হয়, হিজাব পরে ক্লাস করা যাবে না। কারণ, তা বৈষম্য সৃষ্টিকারী। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী, ছাত্রীরা ‘স্কার্ফ’ পরতে পারবে। তবে তার রং হতে হবে ওড়নার রঙের সঙ্গে মানানসই।
মুসলমান ছাত্রীরা এই নিয়মের প্রতিবাদ জানায়। তারা বলেন, এতদিন ধরে লেখাপড়ার মাঝে হিজাব কোনো সমস্যা করেনি। প্রতিবন্ধকতাও সৃষ্টি করেনি । আচমকাই এই বিধিনিষেধ।
এ নিয়ে ক্রমেই বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যে। হিজাবের বিরুদ্ধাচরণ করতেহিন্দু শিক্ষার্থীদের একাংশ গেরুয়া চাদর ও ওড়না পরতে দেখা যায়। দুই ধর্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। অনেক জায়গায় মুসলমান ছাত্রীদের সমর্থনে দলিত হিন্দুরাও নীল চাদর পরে পাশে দাঁড়ান। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও সম্প্রতি টুইট করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
কয়েক দিন যাবৎ রাজ্যে উত্তেজনা ও বিতর্ক চলছে। মুসলমান ছাত্রীদের প্রশ্ন, কেন তাদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কর্ণাটকের মুসলমান ছাত্রীদের বলতে শোনা যায়, ‘বেটি পড়াও বেটি বঢ়াও’ (এগিয়ে নিয়ে যাও) স্লোগান কি শুধু হিন্দু বেটিদের জন্য? মুসলমান বেটিরা বাদ?
কলেজ কর্তৃপক্ষের নিয়মের বিরুদ্ধে এবং হিজাব-বিতর্কের অবসানে কিছু ছাত্রী কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। গতকাল সেই মামলার প্রথম শুনানি ছিল। আজ বুধবারও শুনানি চলবে। শুনানি চলাকালে বিচারপতি দীক্ষিত কৃষ্ণ শ্রীপদ সবাইকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন জানান। একই আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী।
শুনানি শেষ হওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী দ্বিতীয় টুইট করে আগামী তিন দিন রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার কথা জানান।