reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ জানুয়ারি, ২০২২

কুমারিত্ব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা বেআইনি ঘোষণা ব্রিটেনের 

ছবি : সংগৃহীত

কুমারিত্ব নিয়ে ভ্রান্ত ধারণার অন্ত নেই। সমাজে প্রচলিত এসব ভ্রান্ত ধারণাকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে অনেক দেশ।

ব্রিটেনে এখন থেকে কুমারিত্ব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করলে তা অপরাধ বলে গণ্য করা হবে। দেশটি এক চিকিৎসা বিলে এ সংক্রান্ত যে কোনও ধরনের চিকিৎসাকে বেআইনি বলে ঘোষণা করছে।

দেশটির সরকারের বক্তব্য, কুমারিত্ব ফিরে পাওয়ার চিকিৎসাকে যদি মান্যতা দেওয়া হয়, তবে পরোক্ষে কুমারিত্ব রক্ষা করার দাবিকেও মেনে নেওয়া হচ্ছে।

ব্রিটেনে ক্যাথলিক প্রভাবাধীন এক শ্রেণির মানুষ এখনও বিয়ে হওয়া পর্যন্ত মেয়েদের শারীরিক কৌমার্য্য বজায় রাখার ধারণায় বিশ্বাসী। যদিও আধুনিকপন্থীদের দাবি কুমারিত্ব রক্ষা করার ধারণাটিই অবমাননাকর।

নারীবাদীদের দাবি, ‘কুমারিত্ব’ ধারণাটি তৈরিই করা হয়েছে মেয়েদের দমিয়ে রাখার একটি সামাজিক অস্ত্র হিসেবে। এমন ধারণার সঙ্গে মানিয়ে নিতে বহু নারীকেই মানসিক এবং শারীরিক যন্ত্রণার শিকার হতে হয়।

কুমারিত্ব সংক্রান্ত যে ধারনাটি বিভিন্ন দেশের গোড়া সমাজে চালু, তা হলো একজন নারীকে বিয়ের আগে পর্যন্ত তার দেহের কুমারিত্ব রক্ষা করতে হবে। বিয়ের পরে স্বামীর সঙ্গে প্রথম মিলনে স্ত্রীর যৌনাঙ্গ থেকে রক্তপাত হওয়াকেই এ ক্ষেত্রে কুমারিত্বের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

ইরাক-ইরানের মতো পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে এই ধারণার প্রচলন সবচেয়ে বেশি। ইরানে বিষয়টি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, দেশটির শিয়া ধর্মের এক ধর্মগুরু ফতোয়া জারি করে মেয়েদের কুমারিত্ব ফিরে পাওয়ার চিকিৎসাকে বৈধ ঘোষণা করেছেন।

এ ছাড়া আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, পশ্চিম ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার অন্য দেশগুলোতেও এই চিকিৎসা চালু রয়েছে। এমনকি ভারতেও এধরনের চিকিৎসা করা হয়।

তবে এই চিকিৎসা স্ত্রী-রোগের মূল ধারার চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং একে প্লাস্টিক সার্জারি বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে প্রচুর ব্যয়বহুল এই চিকিৎসার চাহিদা রয়েছে।

ব্রিটেনে ক্লিনিকে এই চিকিৎসার জন্য ৩ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত খরচ পড়তে পারে। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকার সমান।

এই চিকিৎসার অনেকগুলি ভাগ রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হাইমেনোপ্লাস্টি বা হাইমেন প্রতিস্থাপন। ব্রিটেনের নতুন হেল্থ এবং কেয়ার আইনে এই হাইমেন প্রতিস্থাপনকেই অপরাধ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, যে সমস্ত ক্লিনিকে এই ধরনের চিকিৎসা করা হবে বা যে চিকিৎসক এই চিকিৎসা করবেন, তাদেরও সমান অপরাধী বলে গণ্য করা হবে। ধরে নেওয়া হবে তারা এ কাজে মদত দিচ্ছেন। আর অপরাধ প্রমাণ হলে জেল হবে পাঁচ বছর।

ব্রিটেনের কোনও বাসিন্দা যদি এই চিকিৎসা করাতে দেশের বাইরেও যান, তবুও তাকে অপরাধী বলেই গণ্য করা হবে।

ব্রিটেনের এই সিদ্ধান্ত অধিকাংশ মহলেই প্রশংসা পেয়েছে। তবে একই সঙ্গে মৌলিক অধিকার রক্ষা নিয়ে আন্দোলনকারীরা প্রশ্ন তুলেছে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে।

তারা জানতে চেয়েছে, চিকিৎসার ক্ষেত্রে কারও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে কি? কেউ নিজে শরীরে কোনও অঙ্গ প্রতিস্থাপন করবেন কি করবেন না, তা কি সরকার ঠিক করে দেবে? সূত্র : আনন্দবাজার

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ব্রিটেন,কুমারিত্ব,কুমারিত্ব ফিরে পাওয়ার চিকিৎসাক,বেআইনি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close