আফগানিস্তানে ঐকমত্যের সরকার গঠনে তালেবানদের চাপ দিতে এক জোট হয়েছে পাঁচ পরাশক্তি দেশ । বুধবার যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, চীন ও ফ্রান্স-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দীর্ঘ ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত নেন তারা।

আফগানিস্তানের সব শ্রেণিপেশার মানুষকে নিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠনের ওপর তাগিদ দিয়েছেন দেশগুলো। বার্ষিক সাধারণ অধিবেশন বৈঠকের পর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘পাঁচটি শক্তিই শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল একটি আফগানিস্তান চায়, যেখানে কোনো বিঘ্ন ও বৈষম্য ছাড়াই মানবিক সহায়তা পৌঁছানো যাবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও জানান, ‘আমরা এমন একটি আফগানিস্তান চাই যেখানে নারী ও শিশুদের অধিকারকে সম্মান করা হয়, যা সন্ত্রাসবাদের আশ্রয় নয়, এমনকি যেখানে জনগণের সব অংশের প্রতিনিধিত্বকারী একটি সমন্বিত সরকার রয়েছে।’

এছাড়া শ্রীলংকা বুধবার তালেবানদের অধীনে আফগানিস্তানের বৌদ্ধ ঐতিহ্য রক্ষার জন্য বিশ্বকে আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ বার্ষিক সম্মেলনে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে বলেন, ‘আমি জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করছি তারা যেন আফগানিস্তানের বৌদ্ধ ঐতিহ্য রক্ষার উদ্যোগ নেন।’

এদিকে বুধবার আফগানিস্তান নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল বৈঠকে চীনের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানান, আফগানিস্তানের ওপর থেকে বিভিন্ন একতরফা নিষেধাজ্ঞা যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাহার করা উচিত। তিনি আরও বলেন, ‘আফগানিস্তানের ওপর আরোপিত বিভিন্ন একক নিষেধাজ্ঞা এবং বিধিনিষেধের যত শিগগিরই সম্ভব অবসান ঘটাতে হবে।

বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি আফগানিস্তানের নতুন সরকারকে দেশ পরিচালনায় পরিকল্পনার কথা জানালেন। তিনি তালেবান সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘বাস্তববাদী হতে হবে, ধৈর্য রাখতে হবে। আরও ইতিবাচক হয়ে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো বিচ্ছিন্ন থাকা যাবে না।

ইতিমধ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল, বেশ কয়েকজন শীর্ষ তালেবান নেতার ওপর আরোপিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দোহার শান্তি আলোচনায় তালেবান নেতাদের অংশগ্রহণের সুযোগ দিতেই তারা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থেকে সাময়িক নিষ্কৃতিপ্রাপ্ত তালেবান নেতাদের মধ্যে রয়েছেন, তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার, শের মোহাম্মদ আব্বাস স্টানিকজাই, জিয়াউর রাহমান মাদানি,খায়রুল্লাহ খাইরুখওয়াহ প্রমুখ।