এম এ মাসুদ

  ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। শীতের দাপটে প্রকৃতি হয়ে পড়ে রুক্ষ। সেই রুক্ষতা দূর করতে আসে বসন্ত। আবহমান বাংলা সাজে এক অপরূপ সাজে। লালে লাল হয়ে ওঠে শিমুল, পলাশ আর কৃষচূড়ার ডাল। গুনগুনিয়ে ফুলে ফুলে খেলা করে ভ্রমর। পাতার মর্মর মর্মর শব্দ আর কোকিলের কুহূতানে মুখরিত হয় রূপসী বাংলা। বসন্তের এমন রূপে মুগ্ধ হয়ে তাইতো কবিগুরু লিখেছেন-

আহা আজি এ বসন্তে,

এত ফুল ফোটে,

এত বাঁশি বাজে,

এতো পাখি গায়।

ঝলমলে রোদ আর দখিণা হাওয়া প্রকৃতি প্রেমীদের বলে দেয় রূপে আগুন ঝরা ফাগুন এসেছে। ফুল ফুটুক আর নাই বা ফুটুক আজ বসন্ত। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ফুলের পশরা সাজিয়ে বসেছে ফুল বিক্রেতারা। কারণ একই সাথে আজ যে বিশ্ব ভালবাসা দিবসও। বসন্তের সাথে ভালবাসা দিবস যোগ হয়ে তা মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে আরো। বাসন্তী রং শাড়ি খোঁপায় হলুদ গাঁদা, রঙ-বেরঙের চুড়ি পরে শৈল্পীক সাজে তরুণীরা বেড়িয়ে পড়ে বসন্তের টানে। তাদের দেখে মনে পড়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই গান-

হলুদ গাঁদা ফুল,

রাঙা পলাশ ফুল,

এনে দে এনে দে,

নইলে বাধবো না,

বাধবো না চুল।

তরুণরাও কম কিসে! বাসন্তীদের জানান দিতে তারাও সাজে হলুদ পাঞ্জাবিতে। তরুণ-তরুণীদের হাতে শোভা পায় গোলাপসহ বাহারি ফুল, হয়তো সেই ফুল প্রিয় মানুষটির জন্য। কিশোর-কিশোরি এবং তরুণ-তরুণীরা যেন বসন্তের প্রথম দিনটির জন্য মুখিয়ে থাকে। হয়তো তাদের নিকট এই দিনটি আলাদা গুরুত্ব বহন করে।

ইতিহাস অনুযায়ী বাংলা সনের প্রবর্তনের সময় ধরা হয় ১৫৫৬ সাল। মোঘল সম্রাট জালাল উদ্দীন মোহাম্মদ বাবর। আরো জানা যায়, খাজনা আদায়ের সুবিধার্তে সভাসদদের পরামর্শে ২৯ বছর পর ১৫৮৪ সালের ১০ কিংবা ১১ মার্চ 'তারিখ-এ-এলাহী' নামে নতুন এক বছর গণনা শুরু হয়।

সে যাই হোক, সম্রাট আকবরের সময় প্রতি বছরে বিভিন্ন উৎসবের মধ্যে অন্যতম ছিল বসন্ত উৎসব। আমাদের দেশে ১৪০১ সাল থেকে বসন্ত উৎসব পালন করে আসছে জাতীয় বসন্ত উৎসব পরিষদ।

ঋতুর পালাবদলে প্রকৃতিও পাল্লা দিয়ে তার রঙ বদলায়। প্রকৃতি প্রেমীদের নিকট থেকে খুব দ্রুতই যেন চলে যায় ঋতুরাজ বসন্ত তার প্রেমিকদের কাঁদিয়ে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বসন্ত,আমার আমি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close