সারিয়া জেবিন

  ০৫ জুন, ২০২১

দৃঢ় মনোবল আর সততা থাকলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব

সৃজনশীল চিন্তা থেকেই শিল্পীর জন্ম। শৈল্পিকতা দান করে কর্মে অনাবদ্যতা। আর শৈল্পিক দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে যদি দেখি তাহলে বলতা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শিল্প রান্না। বন্ধুরা আমি তোমাদের ৯৬/৯৮ এর বন্ধু সারিয়া জেবিন বলছি। ছোটবেলা থেকেই মায়ের হাতের রান্না আমাকে প্রলুব্ধ করত। খুব নেশা ছিল জানার মা কিভাবে রান্না করে। যাই হোক নিজের আত্ম উপলব্ধি এবং দৃঢ় মনোবল নিয়ে এই রন্ধন শিল্পে আসার আগমন।

আমার এই ক্ষেত্রে পরিবারের পাশাপাশি আমার বন্ধুবান্ধবেরা মনোবল জুগিয়েছে বেশি। লেখাপড়ার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রান্নার কোর্সগুলো সম্পন্ন করি। বিয়ের পর নতুন পরিবেশে সবার মুখে আমার রান্নার প্রশংসা আমাকে আরও বেশি অনুপ্রানিত করে। আর এই অনুপ্রেরণায় ২০০৬ সালে বিভিন্ন রান্নার কোর্স করতে উৎসাহিত করে। এবং মোটামুটি সব ধরনের কুইজিং এর কোর্স সম্পন্ন করি।

শখ যে আমার যে পেশায় পরিণত হবে তখন বুঝতে পারিনি। বিশেষ করে ২০২০এ যখন করোনা মহামারির কারণে সব রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যায় এবং সবাই যখন অস্বাস্থ্যকর খাবার বর্জন করে ঠিক তখনি সবার কথা চিন্তা করে বিশেষ করে করোনা রোগীদের স্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করার কথা মাথায় রেখে আমার যাত্রা শুরু। যদিও আমার শুরুটা খুব রমরমা ছিল না।

প্রথম মাসে আমার আয় ছিল ৬০০০ টাকা। যদিও পরিমাণে কম কিন্তু এই ৬০০০ টাকাই আমাকে শিখিয়েছিলো আমিও কিছু করতে পারি। আমি বলে বুঝাতে পারবো না, সেই দিনের সেই আবেগময় অনুভূতি। তারপর আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি আমায়। ক্রেতারাই ক্রেতা বাড়িয়েছে। তাদের প্রশংসা শুনে রেপিডলি ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে।

রান্না খুব সহজ কাজ নয়। এর হাইজিন মেইনটেইন করা খুব জরুরি। সারাদিন এই করে ক্লান্তিময় দেহ নিয়ে যখন ক্রেতাদের আবেগ ও ভালোবাসাময় রিভিউ পড়ছি ক্লান্তি সুমন্তর হয়ে যায়।

আর আমি রান্নার প্রাথমিক সব উপকরণগুলো নিজের হাতে তৈরি করার চেষ্টা করি। যেমন মাওয়া, জদ্দার মিষ্টি, সব ধরনের মসলা ইত্যাদি।

পরিবেশন আমার কাছে খুব বড় বিষয়। কোন অনুষ্ঠানে না সেজে গেলে যেমন বেমানান দেখায়, ঠিক যে কোন রান্না পরিবেশন কালে যদি যত্ন নিয়ে করা হয় তাহলে তার স্বাদ আরও বেড়ে যায়। পরিশেষে বন্ধুরা ‘স্বপ্ন’ দেখতে শিখো। স্বপ্ন দেখলে তা বাস্তবায়ন হয় তার প্রমাণ আমি। আর এর জন্য বেশি পুজিঁর প্রয়োজন হয় না। শুধু দরকার একটু দৃঢ় মনোবল আর সততা।

আমি আমার ক্রেতাদেরকে সব সময় কিছু না কিছু খাবার উপহার, ভালোবাসার টোকেন হিসেবে দিয়ে থাকি। আর আমার এই ক্ষুদ্র ভালোবাসা ক্রেতারা দ্বিগুন উৎসাহের সাথে গ্রহণ করে আমাকে উৎসাহিত করে এবং মনে করিয়ে দেয় থেমো না সারিয়া জাবিন এগিয়ে যাও আমরা আছি। আসলেই আজ নারী উদ্যোক্তা হতে পারি আমি গর্বিত ও আনন্দিত।

লেখক : উদ্যোক্তা

পিডিএসও/ জিজাক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রান্না,উদ্যোক্তা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close