মো. ইফতেখার উদ্দিন

  ৩০ মার্চ, ২০২১

একজন নাহিদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প

ফজলুল করিম নাহিদ, জন্ম ১৯৮৯ সনের লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার রাখালিয়া গ্রামে।পাটোয়ারী পরিবারে বেড়ে উঠা এ নাহিদ ছোট বেলা থেকে স্বপ্ন দেখতেন নেতৃত্ব দেবার। ধাপে ধাপে কেমন যেন, রাজনীতির প্রতি তার ঘৃণার সৃষ্টি হয়। কারণ রাজনীতি হচ্ছে তার কাছে মানুষের সেবা করা, কিন্তু এখনকার প্রেক্ষাপট তার কাছে ভিন্ন। ধীরে ধীরে পড়াশোনায় এগুতে থাকে, ২০০৬ সালে এসএসসি পাস করেন 'রাখালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়' হতে। পরবর্তীতে এইচএসসি, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিবিএ এবং সর্বশেষ এমবিএ করেন বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে।

যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত, সামনে অনার্স এর ফাইনাল। সামনের পথটা তার জন্য কি অপেক্ষা করছে, সে নিজেও জানে না। চলার পথে উঁচু-নিচু এই পৃথিবীতে সামনের দিকটা ততটা সমতল আর মস্রিন ছিল না, যতটা সে স্বপ্ন দেখছিল।

সময়টা ২০১৫ সাল, হঠাৎ বাবাকে হারান। সদ্য গ্রেজুয়েশন শেষ করা এক বেকার তরুণকে "বেকারত্ব" তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল। বাবাহীন পৃথিবীতে পথে-পথে ছায়াহীন ভবিষ্যৎ জীবনের অনিশ্চয়তায় ভুগা এই তরুণ এখন কি করবে? কোথায় যাবে?। এর মাঝে ক্যারিয়ার জীবনে চাচার বাসায় থেকে খাওয়া ঋণ তো আছেই! চারদিক থেকে সব ভাবনা তাকে যেন গ্রাস করছে!

কে সেই চাচা? একমাত্র চাচা মো. ওমর ফারুকের সহযোগিতায় এসএসসির পর চট্টগ্রাম শহরে এসে তারই বাসায় থেকে-খেয়ে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন তিনি। চাচার এই ভালোবাসা যেন বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে খুবই বিরল। লেখকের প্রশ্নবাণে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, চাচার ঋণ কোনদিন শোধ হবার নয়, আল্লাহর কাছে চাচার দীর্ঘায়ু কামনা করেন তিনি।

এর মধ্যেই গ্রাজুয়েশন করা এই তরুণের মার্কেটিং লাইনের কোম্পানিগুলোতে, কষ্টাতীত অভিজ্ঞতা তাকে ধীরে ধীরে আরো বেশ শিখিয়ে তুললো। হঠাৎ একদিন রবি আজিয়াটা লিমিটেড এর চট্টগ্রাম মুরাদপুর ব্রাঞ্চে মিলভিক বাংলাদেশ শাখায় পেলেন চাকরি। এ যেন ক্লান্ত তীর্থ জীবনে তৃষ্ণা মেটানোর হাতছানি।

এরপর থেকে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রতিজ্ঞা করলেন এবার এমন কিছু করবেন যেখানে তিনি নিজেই নেতৃত্ব দিবেন। বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিবেন।

এরই মধ্যেই অবাক করার বিষয় হলো, কোম্পানির চাকরি আর করবেন না তিনি! কারণ চাকরি করতে নয়, চাকরি দেবেন তিনি। এবার নিজেই নাম লেখান চট্টগ্রামের বায়েজিদ এ তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে "আর.কে.আর গ্রীনবাংলা" এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করে।

প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা কোম্পানির সাথে চুক্তির বিনিময় বিভিন্ন ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে পেয়েছে সফলতা, সরকারি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান "নগদ" থেকে পেয়েছে সেরা হবার পুরস্কারও। এখন তার প্রতিষ্ঠানটিতেই চাকরি করেন প্রায় অর্ধশতর বেশি শিক্ষিত তরুণ। হয়তো একদিন কাজ করবে, হাজারো তরুণ।

লেখক : সাংবাদিক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নাহিদ,উদ্যোক্তা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close