তুহিন ভূইয়া
শিক্ষার্থী
সামাজিক মাধ্যমগুলোতে সামাজিকতা কতটুকু?
সামাজিক মাধ্যমে সামাজিকতা কতটুকু আছে সেটা দিন দিন প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছে। মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন পন্থায় অর্থ আয় করা যায়। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ভিডিও তৈরি করে। আবার সেই ভিডিওগুলো দুটি ভাগে বিভক্ত করে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা (১) সামাজিক কন্টেন্ট (২) অসামাজিক কন্টেন্ট।
আমাদের দেশসহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আছে। এই মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে আমরা অতি সহজে একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারি। এই মাধ্যমগুলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে তরুণরা প্রজন্ম।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অনেকে বৈধ পথে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে। এবং তাদের পেশা হিসেবে অনলাইন আয়কে বেছে নিয়েছে। আমাদের দেশের তরুণরা এখন বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে আয় করছে। যার ফলে অনেক যুবকই এখন বেকার নেই।
কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গুলোতে ইদানিং বিভিন্ন কুচক্র মহলের আনাগুনা বেশি দেখা যায়। তারা এটা তাদের আয়ের অন্যতম পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে। তবে সেটা মানুষের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে। অনেক দিন যাবৎ লক্ষ্য করা যাচ্ছে মানুষের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে নানা উপায়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দিন দিন এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু কন্টেন্ট ক্রিয়েটর অসামাজিক ভিডিও,গান,সিনেমা,ওয়েব সিরেজ ও নাটক তৈরি করছে। যার ফলে সামাজিক মাধ্যমগুলোর মধ্যে সামাজিকতা কতটুকু আছে সেটা এখন প্রশ্নের বিষয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যগুলোতে এই কন্টেন্টগুলো খুবই সাড়া পাওয়া যায়। এবং এসব কন্টেন্টগুলোতে বেশি টাকা আয় করা যায়। যার ফলে আমাদের দেশে এই কন্টেন্টগুলো নির্মাণে ঝুঁকছে তরুণ নির্মাতারাও।
যদি লক্ষ্য করা হয় কোন একটি সামাজিক বা ভালো বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে অনলাইনে এত পরিমাণ ভিউ হয় না। যতটা বোস্ট করার মাধ্যমে অসামাজিক কন্টেন্টগুলোতে হয়।
আর এই কন্টেন্টগুলো দেখে সকল বয়সের ব্যবহারকারীরা। আমাদের সমাজে যেমন প্রচলিত আছে খরাপের ক্ষমতা বেশি, ঠিক তেমনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও তাদের দাপট লক্ষ্য করা হয়। আজকাল দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বোস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন ‘ভণ্ড বাবা’দের বিজ্ঞাপন দেওয়া। পৃথিবীতে সেই বাবাই সব সমাধান দিতে পারেন। তিনি একমাত্র বিশেষজ্ঞ এমন কোনো রোগ নেই যে, তিনি চিকিৎসা করতে পারে না। এই বিজ্ঞাপন গুলো দেখে অনেক সহজ সরল মানুষ প্রতারিত হয়। এবং হাজার হাজার টাকা খোয়া যায়।
আরও একটি বিষয় হচ্ছে ভুয়া নিউজ বা তথ্যের মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করে সামাজিকভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে। কিছু কিছু লোক না জেনেই সেই নিউজগুলো শেয়ার করে ছড়িয়ে দিচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে সামাজিক মাধ্যমগুলো কুচক্র মহলের একটি বড় আস্তানা। সেই আস্তানাগুলো এখনই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে এদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দাপুটের সাথে তাদের অপর্কম চালিয়ে যাবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যে হারে তাদের দখলে নিয়ে আসছে। তাদের প্রতিরোধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
লেখক : শিক্ষার্থী ,সমাজকর্ম বিভাগ
সরকারি তিতুমীর কলেজ
পিডিএসও/ জিজাক