হোসনে আরা বেগম

  ০৩ অক্টোবর, ২০২০

নারী হয়ে জন্মেছি বলেই অহংকার করি

কর্মজীবনে আমি যখন সিভিল এভিয়েশনের ভিতরে ব্যাংকে কাজ করতে যেতাম তখন একটা বিষয় আমাকে বেশ আনন্দ দিত। মাঝে মাঝে আমি গর্বে এতটাই আপ্লুত হতাম যে, নারী হিসেবে জন্ম নেওয়ার আনন্দে চোখ ভিজে যেত।

ব্যাপারটি এমন সিভিল এভিয়েশনের মূল গেইট থেকে বেশ দূরে এয়ারপোর্ট রোডের সংযোগ স্থলেই নিরাপত্তা কড়াকড়ি এতটাই যে প্রতিটি গাড়ি থামিয়ে চেক করে উপযুক্ত কাগজপত্র ও কারণ দেখিয়ে ঢুকতে হত। এমনকি পায়ে হেঁটে যারা যেতেন তাদেরও ম্যাগনেটিক ডিক্টেটর-এ শরীর তল্লাশি করা হতো। এখানে নিরাপত্তা কর্মীরা প্রতি সাত বা পনের দিন পর পর পরিবর্তন হতো।

সিভিল অ্যাভিয়েশনে যাওয়ার পথে কখনো আমি নিজে আবার কখনো চালক গাড়ি চালাত। আমি গাড়ি চালাতাম শখে। চালকই বেশি সময় গাড়ি চালাত। যখন আমি গাড়ি চালাতাম নিরাপত্তা প্রহরীরা গাড়ির গতি ধীর করার আগেই ভিতরে যাওয়ার সিগন্যাল দিত। আর যখন চালক গাড়ি চালাত তখন গাড়ির গতি ধীর হলে প্রহরীরা উঁকি দিয়ে ভিতরে যাত্রী কেবল একজন নারী দেখত তখন গাড়ি ভিতরে যাওয়ার ইশারা দিত। কোনওদিনই কৈফিয়ত চায়নি, এমনকি সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রও চায়নি। আর তখন আমার চোখ ভিজে যেত এই ভেবে যে অল্প শিক্ষিত নিরাপত্তা প্রহরী তাদেরও এমন বদ্ধমূল বিশ্বাস যে, নারীরা কোনও অপরাধ করতে পারে না।

কিন্তু আমি জানি আজ পাপিয়া আর সাবরিনাদের দেখে ওদের সে বিশ্বাসে ফাঁটল ধরেছে। দিনে দিনে পাপিয়া-সাবরিনারা হয়তোবা নিজের মাকেও অবিশ্বাস করতে শিখাবে। আর আমরা নারী বলে যারা অহংকার করি লজ্জায় তাদের মাথা নিচু হয়ে আসবে।

হে ঈশ্বর মতিভ্রষ্ট পথভ্রষ্ট নারীকে এই অধঃপতন থেকে মুক্তি দাও, মুক্তি দাও।

পিডিএসও/ জিজাক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সাবরিনা,পাপিয়া,নারী
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close