আল-আমিন মিয়া

  ৩১ আগস্ট, ২০২০

অপরাধ প্রবণতা রোধে ঘোড়াশাল-ডাঙ্গা সড়কটি দ্রুত মেরামত করা উচিত

নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ উপজেলা ও গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার পার্শ্ববর্তী শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে রয়েছে ছোট বড় অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান। যেকারণে ডাঙ্গা ইউনিয়নকে দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবেও ঘোষণা করা হয়েছে। নদীর তীরবর্তী ও নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর জেলা এবং নরসিংদীর সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন হওয়ায় পূর্ব থেকেই এই ইউনিয়নে অপরাধ প্রবণতাও অনেক বেশি। ফলে স্থানীয় প্রশাসনও এই ইউনিয়নকে অপরাধ জোন হিসেবেই চিনেন। শুধু তাই নয়, অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দলও কম নেই এই ইউনিয়নে।

প্রশাসনের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই ইউনিয়নের প্রায় ৩০ ভাগ মানুষের নামেই বিভিন্ন মামলা রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম মামলাগুলো মাদক ও জমিসংক্রান্ত। অন্যের জমি দখল করে নেওয়া ও মাদক বিক্রির যেনো এক মহারাজ্য এই ডাঙ্গা ইউনিয়ন। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের মতো ঘটনাসহ বিভিন্ন বড় বড় অপরাধের ঘটনাও আপোস মীমাংসা হয়ে যায় প্রশাসনের অজান্তেই। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও থেমে নেই এই ইউনিয়ন থেকে অপরাধ প্রবণতা রোধ করতে। বিভিন্ন অপরাধ দমন সহ প্রায় প্রতি মাসেই দুই একজন করে বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠাচ্ছেন। কিন্তু আইনের বিভিন্ন ফাঁকফোকর দিয়ে অপরাধীরা বের হয়ে পুনরায় তাদের অপরাধের রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। ডাঙ্গা ইউনিয়নের অপরাধ প্রবণতা রোধে ওই ইউনিয়নে একটি পুলিশ ক্যাম্পও স্থাপন করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবুও যেনো কিছুতেই রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না অপরাধীদের। এর জন্য প্রধান সমস্যা হিসেবে যোগাযোগ ব্যবস্থাকেই দায়ী করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্য। কয়েক বছর ধরে পলাশের ঘোড়াশাল-ডাঙ্গা ও নরসিংদীর সদর উপজেলার পাঁচদোনা টু ডাঙ্গার আঞ্চলিক সড়কটি বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। সড়কের ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হাজারও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে সড়কটিতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এছাড়া সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এ সড়কটি। ঘোড়াশাল-ডাঙ্গা-কালীগঞ্জ গুদারাঘাট পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে আধা কিলোমিটার সড়কেও কোনো কার্পেটিং নেই। ফলে ঘোড়াশাল-ডাঙ্গা ২০ মিনিটে যাওয়ার বদলে ২ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে পৌঁছাতে। যেকারণে পলাশ থানাধীন অন্যান্য এলাকার চেয়ে ডাঙ্গা ইউনিয়নের অপরাধ প্রবণতা দমন করতে গিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও নানাভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) শেখ মো. নাসির উদ্দিন জানান, পুলিশের তালিকায় ডাঙ্গা ইউনিয়নটি একটি অপরাধ জোন হিসেবে রয়েছে। এক সময় ডাঙ্গা ইউনিয়নে মাদক ব্যবসা ও অন্যের জমি দখলসহ অপরাধীদের বিভিন্ন বাহিনীর রাজত্ব ছিল। কিন্তু নরসিংদীর পুলিশ সুপার (এসপি) প্রলয় কুমার জোয়ারদারের নেতৃত্বে ওইসব বাহিনীর রাজত্ব ধ্বংস করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই এখন এলাকা ছাড়া। ঘোড়াশাল-ডাঙ্গার আঞ্চলিক সড়কটি বেহাল দশা থাকার কারণে ওই ইউনিয়নের অপরাধ প্রবণতা এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবুও আগের তুলনায় বর্তমানে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে ডাঙ্গা ইউনিয়নের অপরাধ প্রবণতা পুরোপুরি রোধ করা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

উল্লেখ-গত ২৯/৩০ আগস্ট প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ও প্রিন্ট সংস্করণে ‘পলাশের ঘোড়াশাল-ডাঙ্গা আঞ্চলিক সড়ক বেহাল’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঘোড়াশাল-ডাঙ্গা,অপরাধ,প্রবণতা,মেরামত
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close