অনিক আহমেদ, গবি প্রতিনিধি
গবি শিক্ষার্থীদের দেশের সর্বাধুনিক ‘ব্লাইন্ড স্টিক’ উদ্ভাবন
সমাজের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অসহায় মানুষের চলাফেরা সহজতর করতে অত্যাধুনিক সুবিধাসম্বলিত ‘ব্লাইন্ড স্টিক’ উদ্ভাবন করা হয়েছে। অসামান্য এই কাজটি করেছেন সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) মেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী তন্ময় রায় ও মাহবুব আল মামুন।
মঙ্গলবার সকালে অত্যাধুনিক এই ডিভাইস উদ্ভাবনের বিষয়টি প্রতিদিনের সংবাদকে নিশ্চিত করেন তারা। বিভাগের শেষ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত প্রজেক্টের অংশ হিসেবে কাজটি সম্পন্ন করা হয়।
দেশের সবচেয়ে আধুনিক এই ব্লাইন্ড স্টিকের বিশেষত্ব সম্পর্কে তন্ময় ও মাহবুব জানান, চলার সময় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সামনে কোনো বাঁধা থাকলে সংকেত দেবে তারবিহীন হেডফোনের মাধ্যমে, যা কাজ করবে আল্ট্রাসোনোমিটারের সাহায্যে। রাস্তার কোথাও উঁচু-নিচু থাকলে, সেটিও সংকেত দিয়ে জানিয়ে দেবে এ স্টিক। ব্যক্তিটি হারিয়ে গেলে অবস্থান নির্ণয়ের জন্য রয়েছে জিপিএস ফিচার।
স্টিককে আরও আপডেট করতে এতে ওয়াটার সেন্সর যুক্ত করা হয়েছে। এটি ওই ব্যক্তির চলাচলের পথে পানি থাকলে, তাকে সতর্ক করবে। এ ছাড়া, স্টিকের পালস সেন্সরের মাধ্যমে একজন অন্ধ ব্যক্তির পালসও পরিমাপ করা যাবে। আর ইমারজেন্সি বাটনের মাধ্যমে ব্যবহারকারী সাহায্যের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন খুব সহজেই।
জানা যায়, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি কাজ শুরু করা এই ডিভাইসটি তৈরিতে প্রায় ৭ মাস সময় লেগেছে। দেশে ৫টি ফিচার সমৃদ্ধ এমন ডিভাইস এটিই প্রথম। বাণিজ্যিকভাবে এটি উৎপাদন করা হলে এক থেকে দেড় হাজার টাকার মধ্যে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো যাবে।
পুরো কাজটি সম্পন্ন করতে সহায়তা করেছেন ওই বিভাগের সাবেক প্রধান ও প্রজেক্টের সুপারভাইজার ড. গোলাম আবু জাকারিয়া, বর্তমান বিভাগীয় প্রধান ড. হাসিন অনুপমা আজহারী, কো-সুপারভাইজার এবং বিভাগের শিক্ষক নাজমুল আলীম ও উজ্জ্বল সরকার নামে একজন পরামর্শক।
নতুন এই উদ্ভাবন সম্পর্কে ড. আজাহারী বলেন, মেডিকেল ফিজিক্স সেক্টরে কাজটাই হলো সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির ব্যবহারের মধ্য দিয়ে মানব সমাজের জীবন সহজ করা। আমরাও এই প্রযুক্তির সাহায্য দ্বারা নতুন নতুন কিছু তৈরি করতে শিক্ষার্থীদের সবসময় উৎসাহিত করি। এই ব্লাইন্ড স্টিক তারই ফসল। তন্ময়কে আন্তরিক অভিনন্দন। এভাবেই আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ডা. দেলওয়ার হোসেন বলেন, নিঃসন্দেহে এটা একটি প্রশংসনীয় কাজ। যেকোনো কিছু তৈরি সহজ বিষয় নয়। এমন একটা ডিভাইস আমাদের শিক্ষার্থীরা তৈরি করতে পেরেছে, এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। যেসব প্রফেসর ও শিক্ষার্থী এটার কাজে ছিলেন, সবাইকে আমার তরফ থেকে অভিনন্দন।
পিডিএসও/হেলাল