
ফিলিপাইনে বাংলাদেশি গার্মেন্টস ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলার পাসায় সিটিতে বাংলাদেশি এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ মে) স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টায় আনোয়ার হোসেন নামে ওই ব্যবসায়ীকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি বাংলাদেশ গার্মেন্টস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন ফিলিপিন্স করপোরেশনের সভাপতি ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরে।
ফিলিপাইনের পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় ফিলিপাইনজুড়ে বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা গেছে, আনোয়ার হোসেন ২৬ বছর আগে ব্যবসার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে ফিলিপাইনে পাড়ি জমান। তিনি ফিলিপাইনে গার্মেন্টস ব্যবসার প্রসার শুরু করেন। বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে সেখানে বিক্রি করতেন তিনি।
নিহতের ভাই আবুল হোসেন জানান, কয়েক দিন আগে তার ভাই গোডাউনে প্রবেশ করার আগে এক ফিলিপাইন এসে ধাক্কা মারে এবং কিল-ঘুষি মেরে চলে যায়। ওই ঘটনার পর আনোয়ার হোসেন অসুস্থ ছিলেন। গতকাল তিনি বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। এরপর ঘটনার শিকার হন। পথচারীর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
আবুল হোসেন আরও জানান, ফিলিপাইনের একজন কিলারকে দিয়ে তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তি ফিলিপাইন পুলিশকে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাতে তিনি স্বীকার করেছেন তাকে এক লাখ টাকায় ভাড়া করা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি কোন ব্যবসায়ীর পরিকল্পনায় তাকে হত্যা করা হয়েছে তার নাম তারা জানতে পারেননি।
আনোয়ার হোসেনের ভাই আবুল হোসেন জানান, আমার ভাই আমাদের কাছে বটগাছের মতো ছিল। পুরো পরিবার নির্ভর ছিল তার উপর। বাংলাদেশি ব্যবসায়ী হিসেবে তার ব্যাপক সুনাম আছে। গতকাল রাতে তাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে। দূতাবাস থেকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমার বিশ্বাস, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
আবুল হোসেনের ধারণা, তার ভাই বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায়ীদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন অন্যায় নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। এ কারণে তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে কিলার দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
আনোয়ার হোসেনের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলায়। তিনি স্ত্রী নিয়ে ফিলিপাইনে থাকতেন। ফিলিপাইনের ভাষা জানার কারণে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে তার অনেক জনপ্রিয়তা ছিল। ফলে তার মৃত্যুতে ফিলিপাইনজুড়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তার মরদেহ দেশে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’