আর্লি ওয়ার্নিংয়ে জানা যাবে বজ্রপাতের আগাম খবর
দেশে বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর হার বাড়ছে। গত ১১ বছরে বজ্রপাতে ২ হাজার ৮০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ক্রমেই মৃত্যুর হার বাড়ায় ২০১৫ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
এ অবস্থায় প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে মানুষের মৃত্যু হার কমাতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য বজ্রপাতের আগাম সংকেত পাওয়া যাবে এমন মেশিন সংগ্রহ করার কথা জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।
মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে ৪৭৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় বজ্রপাতের ৪০ মিনিট আগে সতর্কবার্তা দেওয়ার যন্ত্র কিনবে সরকার। যে যন্ত্রগুলোর মাধ্যমে আর্লি ওয়ার্নিং পাবে মানুষ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আধুনিক বিশ্বে বজ্রপাতের ক্ষেত্রেও সাইক্লোনের মতো আগাম সতর্কবার্তা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। কতগুলো মেশিন তৈরি করা হয়েছে, যেগুলো ৪০ মিনিট আগেই শনাক্ত করতে পারে—কোথায় বজ্রপাত হবে। তাই বজ্রপাতের ক্ষেত্রে আর্লি ওয়ার্নিং দেওয়ার মেশিনগুলো আমরা বসাবো।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বজ্রপাতপ্রবণ যে অঞ্চলগুলো আছে, সেখানে বিশেষ করে হাওর-বাওড় এলাকায় গুরুত্ব আমরা বেশি দিয়েছি। এই সিগন্যালটা যাতে একটি অ্যাপের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের মোবাইলে ম্যাসেজ আকারে যেতে পারে, সেই কাজও আমরা শুরু করবো।
দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যতগুলো মৃত্যুর খবর দেখেছি, সবগুলো খোলা মাঠ ও হাওরের মধ্যে। শহরে যারা ঘরবাড়িতে বসবাস করে তারা বজ্রপাতে মৃত্যুবরণ করে না। আমরা বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের মতো বজ্রপাত আশ্রয়কেন্দ্র করার পরিকল্পনা করেছি। বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা এবং অন্য এলাকায়ও এটা হবে।
তিনি বলেন, আমরা ডিজাইন করেছি, এক ডেসিমেল জায়গায় একটা পাকা ঘর থাকবে। প্রত্যেক ঘরে একটি করে লাইটনিং অ্যারেস্টার দেওয়া হবে। যাতে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে সতর্কবার্তা শোনার পর মানুষ সেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারে। বজ্রপাত না হওয়া পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো বহুমুখী হবে। এখানে কৃষক ও মৎস্যজীবীরা সকালে নাস্তা করতে পারবেন। দুপুরে খেতে পারবেন। ঝড়-বৃষ্টিতে আশ্রয় নিতে পারবেন। কেউ চাইলে বিশ্রামও নিতে পারবেন।