গাজী শাহনেওয়াজ

  ২০ জুলাই, ২০২০

বন রক্ষায় সংশোধন হচ্ছে আইন

বনের কার্যক্রম সম্প্রসারণ, রক্ষা ও নিরাপত্তা বাড়াতে প্রায় শত বছরের আইনে সংশোধন আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে বনজদ্রব্য স্থানান্তর এবং কাঠের ওপর শুল্ক আরোপ আইন আরো সহজ হবে। নতুন আইনে বনে অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই আটক করতে পারবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। একইভাবে কোনো গবাদিপশু বনে প্রবেশ করে বনের ক্ষতি করলে মালিকের জরিমানার বিধান রাখা হচ্ছে। এ বিধানের আলোকে প্রতিটি হাতির জন্য ৫ হাজার টাকা, মহিষ বা উটের জন্য ১ হাজার টাকা, ঘোড়া, খচ্চর, বলদ ও গাভীর জন্য ৫০০ টাকা এবং ছাগল-ভেড়া এই জাতীয় প্রাণীর জন্য ২০০ টাকা হারে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে।

এছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনো কর্মকর্তা বন আইনের ৬৫ ধারা অনুযাযী কাউকে হয়রানিমূলকভাবে এবং নিষ্প্রয়োজনে, কোনো সম্পত্তি জব্দ করেন তাহলে ওই কর্মকর্তা সর্বোচ্চ এক বছর এবং অনধিক এক মাসের কারাদন্ড এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা এবং অন্যূন ২ হাজার টাকা অর্থ দন্ডে দন্ডিত হবেন। তাছাড়া কোনো ব্যক্তি বন অপরাধের সঙ্গে জড়িত আছে সন্দেহ হলে তাদের গ্রেফতারের পর মুচলেকা দিয়ে মুক্তির বিধান রাখা হচ্ছে। আগামী ২৬ জুলাই পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভায় এই বিলটি উত্থাপন করে আলোচনার জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে।

বন অধিকার অর্জনে বাধা সংক্রান্ত আইনের ৫ ধারায় বলা আছে, ‘বিদ্যমান বনের উত্তরাধিকার বা সরকারের লিখিত অনুদান বা চুক্তি ব্যতিত বা প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার সময় কোন ব্যক্তির কোন অধিকার বর্তানো থাকলে সেটা ব্যতিত কেহ অন্য কোন অধিকার অর্জন করতে পারবেন না। এসব বনভূমি কৃষি কাজের উদ্দেশ্যে বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে নূতনভাবে পরিষ্কার করা যাবে না।’

আইনের ৩০ ধারা মতে, যেকোনো ভূমি যা সরকারি সম্পত্তি বা সরকারের স্বত্বাধিকার রহিয়াছে এবং সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে বনায়ন, সংরক্ষণ বা ব্যবস্থাপনার জন্য মালিকের স্বেচ্ছায় লিখিত চুক্তির মাধ্যমে সরকারকে অর্পণ করা ভূমিতে সামাজিক বনায়ন প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। তবে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি সংক্রান্ত অপরাধ বা ক্ষতি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং এটা লঙ্ঘনের জন্য অনধিক ৬ মাসের জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা হবে।’

আর কোনো রক্ষিত বন থেকে কেউ অসৎ উদ্দেশ্যে কাঠ অপসারণ করলে সর্বোচ্চ ৫ বছর অন্যূন ৬ মাসের জেল এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ ও সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে অপরাধীকে।

প্রস্তাবিত আইনের ৪০ ধারায় বলা হয়েছে, ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমির ক্ষেত্রে ভূমি ভাঙা, কীটনাশক ব্যবহার, খাঁড়া পাহাড় থেকে ফসল আহরণ বা অন্যবিধ বন ব্যবস্থাপনা কার্যাদি, যাহা সম্পত্তি, নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ বা ভূমির উৎপাদনী ক্ষমতা, দেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক ঐতিত্র্য বা প্রতিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য হুমকি তা বন্ধ ও সীমিত করার জন্য সরকার বিধি প্রণয়ন করতে পারবেন।’

আইনের ৫৫ ধারার (৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘যে বনজ সম্পদ সম্পর্কে অপরাধটি সংঘটিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয় সেটা যদি সরকারি সম্পত্তি হয় এবং অপরাধী অজ্ঞাত হয়, সেই ক্ষেত্রে যথাশিগগির সম্ভব অফিসার, তাহার ঊর্ধ্বতন অফিসারকে পরিস্থিতি জানিয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে হবে।’

এছাড়া আরো অনেক বিধান যুক্ত করে বন সংরক্ষণ আইনটিকে যুগোপযোগী করতে কাজ করছে সরকার।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আইন সংশোধন,বনায়ন,বন রক্ষা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close