reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ জুন, ২০২১

ভুল ইংরেজি বলায় মানসিক হাসপাতালে নায়িকা

ইরতিজা রুবাব। তবে পাকিস্তানের ললিউড এবং বলিউডের কাছে তিনি মীরা। উর্দু, পাঞ্জাবি এবং হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।

নব্বইয়ের দশকে ললিউডে দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকেন মীরা। ১৯৯৯ সালে ‘খিলোনা’ নামে এক পাক ছবিতে তার অভিনয় দর্শকের নজর কাড়ে। ওই ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি পাকিস্তানের ‘নিগর পুরস্কার’ও পান। পরের বছর ফের আরও একটি ছবি তাকে ওই পুরস্কার এনে দেয়।

অভিনয়ে তো তিনি দক্ষ ছিলেনই। পাশাপাশি আরও একটি বিষয় তাকে জনপ্রিয় করে তুলেছিল। সব সময় খবরের শিরোনামে থাকা। বিতর্ক যেন মীরার ছায়াসঙ্গী ছিল। তিনি যেখানেই গেছেন, যা করেছেন সব কিছুতেই কোনো না কোনো বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

ওই সময়ের ললিউডের প্রথম সারির এই নায়িকা ২০০৫ সালে পাড়ি জমান ভারতে। ভেবেছিলেন ভারতীয়দের কাছেও একই জনপ্রিয়তা অর্জন করবেন। কিন্তু ঘটেছিল অন্য রকম।

মাত্র ৩টি বলিউড ছবিতে সুযোগ পান মীরা। ২০০৫ সালে ‘নজর’ ছবিতে সুযোগ পান। তার পর ‘কসক’ এবং বলিউডে তার শেষ ছবি ছিল ‘পাঁচ ঘণ্টে মে পাঁচ করোড়’।

এই ৩টির কোনোটিই বক্স অফিসে প্রভাব ফেলতে পারেনি। সব ছবিই বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। তবে মীরা নজর কাড়েন পরিচালকদের। সে সময় বলিউডের অনেক বড় মাপের পরিচালকই তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

কিন্তু মহেশ ভাট তাকে আর কোনো পরিচালকের অধীনে ছাড়তে রাজি ছিলেন না। মীরা না জানিয়ে এক পরিচালকের সঙ্গে দেখা করেছেন জানতে পেরে তাকে নাকি চড় মেরেছিলেন মহেশ।

‘চড়’ বিতর্ক তাকে ফের শিরোনামে আনে। তখন মীরার প্রতি মহেশের বিশেষ অনুভূতির কথাও সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন মীরা। কিন্তু সব সময় যে বিতর্ককে সঙ্গী করে শিরোনামে থাকা যায় না সে দিন বুঝেছিলেন মীরা। প্রভাবশালী পরিচালক মহেশের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় চিরতরে তার বলিউড ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যায়।

মীরাকে ফিরতে হয় পাকিস্তানে। সেখানে তখনও আগের মতোই জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। ফের ছবির প্রস্তাব আসতে শুরু করে তার কাছে। ললিউডের পাশাপাশি পাক ধারাবাহিকে এখনও চুটিয়ে অভিনয় করে চলেছেন তিনি। কিন্তু এর মাঝে একটি খবর পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যমকে নাড়িয়ে দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মীরাকে! সুস্থ নায়িকা যুক্তরাষ্ট্রের মানসিক হাসপাতালে কী করে গেলেন? কীভাবেই বা তিনি সেখানে পৌঁছালেন? এ সব প্রশ্ন নিয়ে যখন উত্তাল পাক সংবাদমাধ্যম তখন আসল কারণ সামনে আসে।

মীরা আসলে একটি কাজে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি বেসিরকারি হাসপাতালে কোভিড ১৯-এর প্রতিষেধক নিতে যান। প্রতিষেধক নিয়ে ফিরে এলে বিষয়টি সেখানেই থেমে থাকত। হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে গল্প জুড়তে গিয়েই সমস্যার সূত্রপাত।

মীরার ইংরেজি উচ্চারণ মারাত্মক। মীরা তার সেই ভুলে ভরা ইংরেজিতে কথা বলে নাকি চিকিৎসক-নার্সদের আপ্লুত করতে চেয়েছিলেন। তিনি যে একজন তারকা এবং তার সঙ্গে যেন সবাই তারকার মতো আচরণ করেন তা বোঝাতে গিয়েছিলেন।

মীরার ইংরেজি শুনে তাকে তারকা না ভেবে উল্টো মানসিক ভারসাম্যহীন ভেবে বসেন চিকিৎসকরা। প্রতিষেধক কেন্দ্র থেকে সোজা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে।

এরপর ক’দিন সেখানেই ছিলেন। যত চিৎকার করে নিজেকে সুস্থ প্রমাণের চেষ্টা করেছেন তত সবার কাছে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে উঠেন। শেষে চিকিৎসকদের অনেক বুঝিয়ে বাড়িতে যোগাযোগ করেন মীরা। তার মা পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার পরই যুক্তরাষ্ট্রের পাক দূতাবাস তাকে মানসিক হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দেশে ফেরে।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

পিডিএসও/ জিজাক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মানসিক হাসপাতালে নায়িকা,ভুল ইংরেজি,টিকা,করোনাভাইরাস,মহামারি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close