বিনোদন প্রতিবেদক

  ০১ অক্টোবর, ২০১৯

ভালোবাসায় সিক্ত আবুল হায়াত

‘অভিনয় করতে করতেই মৃত্যুকে বরণ করতে চাই’

অনুষ্ঠানে এসে অনেকেই ‘সার্থক জনম তোমার হে শিল্পী নিপুণ’ বইটি হাতে নিয়ে বাবাকে নিয়ে লেখা বিপাশা হায়াতের লেখাটা বারবার খুঁজছিলেন সবাই। খুঁজতে খুঁজতে বইটির একেবারেই শেষ অংশে মিলল বাবাকে উদ্দেশ্য করে বিপাশার লেখা। বিপাশার এই লেখাটি বইয়ের শুরুতেই কিংবা মাঝখানে থাকতে পারত। কিন্তু আবুল হায়াত অন্য সবাইকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিজের মেয়ের লেখাটি সবার শেষেই রাখলেন। আবুল হায়াত এমনই জীবন চলার পথে তিনি কোনো দিন পক্ষপাতিত্ব করেননি। যাকে যখন যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন, তিনি সেভাবেই তা করেছেন।

বিপাশা হায়াত বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনের একজন প্রতিথযশা অভিনেত্রী, কিন্তু আবুল হায়াতের কাছে তার আদুরে মেয়ে। তাই স্নেহের মেয়ের লেখাটি শেষ অংশেই রাখলেন। বাবাকে উদ্দেশ্য করে লেখাটি যখন বিপাশা হায়াত গত রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পীকলা একাডেমির নৃত্যকলা ও সংগীত বিভাগের মিলনায়তনে সবার সামনে দাঁড়িয়ে পড়ছিলেন, বিপাশার আবেগের সঙ্গে সবার আবেগ মিশে গিয়ে যেন একাকার হয়ে গিয়েছিল। এমন একজন কিংবদন্তি বাবার ৭৫তম জন্মদিনে এমন যোগ্য সন্তানের কণ্ঠে আবেগময় কথা যেন সবাইকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও দূরে কোথাও নিয়ে গিয়েছিল।

আবুল হায়াতের ৭৫তম জন্মদিন উদযাপন এবং আবুল হায়াতকে নিয়ে লেখা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণা এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জানান অনেকেই। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন আতাউর রহমান, দিলারা জামান, মামুনুর রশীদ, ড. ইনামুল হক, গোলাম রব্বানী, আবদুস সেলিম, ডলি জহুর, সারা যাকের, নওয়াজীশ আলী খান, খায়রুল আলম সবুজ, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, জাহিদ হাসানসহ অনেকে।

শুরুতেই বিধুর নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আবুল হায়াতের জীবনের আরেক আলোকিত অধ্যায়ের যাত্রা হয়। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন নিমা রহমান ও অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক অভিনেতা আহসান হাবিব নাসিম। অনুষ্ঠানে দুটি সংগীত পরিবেশন করেন ফারহিন খান জয়িতা।

আবৃত্তি করেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ও মুনিরা ইউসুফ মেমী। সবার বক্তৃতা শেষে আরো ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ডিরেক্টরস গিল্ড, নির্মাতা গাজী রাকায়েত, তারিকুল ইসলামসহ আরো অনেকেই। অনুষ্ঠানে আবুল হায়াতের স্ত্রী শিরীন হায়াত, দুই সন্তান বিপাশা হায়াত, নাতাশা হায়াত, দুই মেয়ের জামাই তৌকীর আহমেদ, শাহেদ শরীফ খানসহ নাতি-নাতনিরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় আবুল হায়াত বলেন, ‘এক জীবনে আমি অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। তবে এটা সত্যি, আমি আমার পরিবারকে সময় দিতে পারিনি। আমার স্ত্রী পুরো পরিবারকে আগলে রেখে আজকের এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। তার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। অভিনয় করেই আমি দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছি। অভিনয় করতে করতেই আমি মৃত্যুকে বরণ করতে চাই। এটাই আমার জীবনের শেষ ইচ্ছে।’

এদিকে ‘সার্থক জনম তোমার হে শিল্পী সুনিপুণ’ বইটি সম্পাদনা করেছেন জিয়াউল হাসান কিসলু এবং প্রকাশ করেছে ‘প্রিয় বাংলা’।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আবুল হায়াত,আবুল হায়াতের জন্মদিন,বিপাশা হায়াত,সার্থক জনম তোমার হে শিল্পী নিপুণ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close