বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
বশেমুরবিপ্রবিতে হলে ঢুকে ছুরিকাঘাত
বিশ্ববিদ্যালয়ে বিচার না পেলে আত্মহত্যার হুঁশিয়ারি শিক্ষার্থীর
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) হলের রুমে ঢুকে এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও ছুরিকাঘাতের ঘটনার ১৫ দিনেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দুই দফা প্রতিশ্রুতির পরও তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে ‘আত্মহননের’ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হল চত্ত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের চতুর্থবর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন এ হুঁশিয়ারি দেন। এর আগে ৬ নভেম্বর শেখ রাসেল হলের কক্ষে ঢুকে রনি মৃধার নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাকে নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে সাজ্জাদ হোসেন জানান, নির্যাতনের ঘটনা জেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও বিভাগের চেয়ারম্যান তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ সময় রাতেই জরুরি সভা করে সুষ্ঠু বিচারের প্রক্রিয়া শুরুর আশ্বাস দেন তারা। পরে ৩ কর্মদিবস সময় দিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিকে ১২ নভেম্বরের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
কিন্তু ১২ নভেম্বর সাজ্জাদের জবানবন্দি দেওয়ার আগের দিন (১১ নভেম্বর) তার হলে এসে তদন্ত কমিটির কাছে সত্য ঘটনা বললে গুমের হুমকি দিয়ে যায় রনি ও রাতুল। এরপর তিনি সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাংলোর সামনে দ্রুত বিচার ও জীবনের নিরাপত্তার দাবি নিয়ে ‘আমরণ অনশনে’ বসেন সাজ্জাদ।
- ঘটনার ১৫ দিনেও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন, প্রকাশ করা হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন।
- দুই দফা প্রতিশ্রুতি দিয়েও কথা রাখেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
- অভিযুক্তরা ক্যাম্পাসে ঘুরছে, অংশ নিচ্ছেন ক্লাস-পরীক্ষায়।
অনশনের পর হামলার ঘটনায় ১ দিনের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত সম্পন্ন ও দোষীদের শাস্তির প্রতিশ্রুতি দেয় প্রশাসন। কিন্তু দ্বিতীয় দফা প্রতিশ্রুতির ১০ দিন পেরিয়ে গেছে। এদিকে তদন্ত কমিটির তদন্ত রিপোর্ট ও বিচারের অগ্রগতির কিছুই এখনো পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘অপরাধীরা এখনো ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে ও ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি। এ অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতা, হতাশা ও মানসিক সংকটের কারণে যদি কোনোরকম ভুল সিদ্ধান্ত নেই, বা সুইসাইডও (আত্মহত্যা) করি, এর দায় সম্পূর্ণ প্রশাসনের ওপর বর্তাবে।’
তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরারব আজই (মঙ্গলবার) প্রতিবেদন জমা দেব।’
জানতে চাইলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ও তদন্ত কমিটির সভাপতি ড. হাসিবুর রহমান কোনো বক্তব্য দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি।
পিডিএস/আরডি