নানা সংকটে মনোবল ঠিক করতে হবে তরুণদের
অভিভাবকের অধিক প্রত্যাশা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, পারিবারিক ও ব্যক্তিজীবনে টানাপড়েন, শিক্ষাজীবনে অস্থিরতা ইত্যাদি কারণে শিক্ষার্থীদের হতাশা দানা বাঁধছে। প্রয়োজনীয় শুশ্রুষা ও মনোযোগের অভাবে এ হতাশা তাদের পরিচালিত করছে আত্মহত্যার মতো ভয়াবহ দিকে।
সে বিষয়ে সচেতন করতে ‘প্রেরক ফাউন্ডেশন’ শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করে আত্মহত্যা প্রতিরোধমূলক অনুষ্ঠান ‘আলোর মুখোমুখি’।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. ফরহাদ হোসেন, প্রক্টর প্রফেসর ড. মীর মো. মোজাম্মেল হক, কবি, সাংবাদিক ও গবেষক ড. কাজল রশীদ শাহীন, লেখক ও গবেষক ফয়সাল আহমেদ, ডেইলি স্টার পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক ইমরান মাহফুজ, প্রেরক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শফিক আহমেদ ভুইয়া এবং পেরেন্টস এজিং ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আল জোবায়ের।
ফরহাদ হোসেন বলেন, আমি মনে করি—নিজেকে কেন হত্যা করব। মানুষের কষ্ট দেওয়ার জন্য নিজেকে শেষ করে দেওয়া উচিত নয়। নিজেকে ভালোবাসতে হবে।
প্রেরক ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে কাজল রশীদ শাহীনসহ অতিথিদের সঙ্গে অন্যরা। ছবি : সংগৃহীত
কাজল রশীদ শাহীন বলেন, একটি সমাজ নানাভাবে সংকট মোকাবিলা করে। সেই সমাজের প্রভাব পড়ে তরুণ প্রজন্মের ওপর। তার থেকে প্রজন্মের মুক্তি দরকার। মনে রাখতে হবে, রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের জীবনেও অনেক ব্যথা, দুঃখ ছিল কিন্তু তারা জীবনের নিয়ম থেকে বিদায় নেননি। তারা কাজ করে গেছেন সাহিত্য-সংস্কৃতির। সমাজের অবহেলা পেয়েও এগিয়ে কালজয়ী হয়েছেন। আমরা তাদের জীবনের গল্প খেয়াল করলে প্রেরণা পাব।
ফয়সাল আহমেদ বলেন, জীবনের আনন্দ ছড়িয়ে দিয়ে বাঁচার প্রেরণা দিতে হবে আমাদের। প্রেরকের অভিনব কাজের প্রসংশা করেন তিনি। ইমরান মাহফুজ বলেন, ‘আমাদের দেশ এগিয়ে নিতে হলে তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।’
আত্মহত্যাকারীদের একটি বড় অংশ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মান-অভিমানের কারণে। এর পরিমাণ ২৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। তাই বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের দূরত্ব নিরসনের উপায় নিয়ে কথা বলেন আবদুল্লাহ আল জোবায়ের।
আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রধান বাধা হলো সামাজিক সচেতনতার অভাব এবং এ বিষয়ে সঠিক তথ্য ও পর্যালোচনার সংকট। আত্মহত্যা প্রবণতার ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দশম, যা মারাত্মক মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছি আমরা। এ বিষয়ে অধিকতর সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে প্রেরক ফাউন্ডেশন।
পিডিএস/মীর