শুভ দে, মাভাবিপ্রবি
৪ হাজার ব্যাগ রক্ত সরবরাহ মাভাবিপ্রবি ‘বাঁধন’ ইউনিটের
টাঙ্গাইলের মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রক্ত দাতাদের সংগঠন 'বাঁধন-মাভাবিপ্রবি ইউনিট' ২০১৬ সাল থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। এই সংগঠনের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো স্বেচ্ছায় রক্তদান এবং রক্তদানে উদ্বুদ্ধকরণ। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের একটি মাধ্যম হলো সকলকে নিজের রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে অবহিত করা এবং রক্তদানে উৎসাহ প্রদান করা। এই কাজটিই পড়ালেখার পাশাপাশি করে আসছেন মাভাবিপ্রবি বাঁধন ইউনিটের কর্মীরা।
এই পর্যন্ত তারা চার হাজারের বেশি ব্যক্তিকে রক্ত দান করতে সক্ষম হয়েছে। বাঁচিয়ে তুলেছেন অনেক মুমূর্ষ রোগীকে। মাভাবিপ্রবি বাঁধন ইউনিট বিনামূল্যে প্রায় ১১ হাজার ব্যক্তির রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করতে তারা সক্ষম হন। এ ছাড়াও, তারা ক্যাম্পাসে ও বাইরে বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালনা করে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী বিনামূল্যে রক্ত দান করে সংগঠনটির মাধ্যমে। এতে উপকৃত হয় টাঙ্গাইলের জেলার জনগণ। এই সংগঠনটির জন্য টাঙ্গাইলে মাদকাসক্তদের রক্ত বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাঁধন সংগঠনটি ২৪ ঘণ্টা মোবাইল ফোনে তাদের জরুরি সেবা চালু রাখে। তারা বিভিন্ন পোস্টার, ব্যানারে তাদের সংগঠনের প্রচার কার্যক্রম চালান। এ ছাড়াও, মাভাবিপ্রবি বাঁধন ইউনিট তাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ সারাবছর ধরেই চালু রাখে। একটি দক্ষ সংগঠন গড়ে তুলতে নিরলস ভূমিকা রেখে চলেছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি।
মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতির বিজিই বিভাগের ওমর ফারুক বলেন, ‘বাঁধন’ এ স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের আমরা প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করি। এ ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমাদের কর্মীরা আরও দক্ষ হয়ে ওঠে এবং নিজেদের কাজ সম্পর্কে আরো ভালোভাবে অবগত হয়। প্রশিক্ষণ আমাদের প্রিয় অনুজদের তাদের নিজের কাজ সম্পর্কে আরো বিশদ ধারণা দিয়েছে যা পরবর্তীতে স্বেচ্ছায় রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কার্যক্রমে আমাদের কাজে আসবে। সর্বশেষে আমরা ধন্যবাদ জানাই আমাদের আজকের এই কার্যক্রমের আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব কে যারা যারা এই সম্পূর্ণ কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছেন এবং আয়োজন করেছেন। বাধন মাভাবিপ্রবি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন।’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে কিছু মহৎ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সংগঠনটির জন্ম। স্বেচ্ছায় রক্তদানে উদ্বুদ্ধকরণ এবং বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দেওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য। রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন সুদক্ষ কর্মী। কর্মীদের সুদক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করি। এ ছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ও বাইরে বিভিন্ন স্কুল, কলেজে আমরা ব্লাড গ্রুপিং ক্যাম্পেইন পরিচালনা করি।
সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক এফটিএনএস বিভাগের শিক্ষার্থী ইনসানিয়াত বাঁধন বলেন, আমরা সেচ্ছায় কাজ করে চলেছি। আমরা বিভিন্ন ক্যাম্পেইন করে থাকি। ফলে রক্তদাতাদের ভয় কমে যাচ্ছে ও তারা রক্ত দান করতে উৎসাহিত বোধ করছে। ১৯৯৭ সালের ২৫ অক্টোবর বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির মাধ্যমে ঢাবির ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল থেকে বাঁধনের যাত্রা শুরু হয়।
পিডিএস/আরডি